হোম > বিশ্ব > পাকিস্তান

ইমরান খানকে সাজঘরে ফেরালেন যাঁরা 

পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর ক্ষমতা হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গতকাল শনিবার মধ্যরাতে এই অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। 

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইমরান খানকে গদিচ্যুত করতে তৎপরতা বাড়িয়ে দেয় পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো। আর এতে বড় ভূমিকা রাখেন পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলোর বেশ কয়েকজন নেতা। 

তাঁরা হলেন—

শাহবাজ শরিফ 

শাহবাজ শরিফ, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই। ইমরান খানের পর পাকিস্তানের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী এই শাহবাজ শরিফ। ৭০ বছর বয়সী শাহবাজ পাকিস্তানের একজন হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতা। তিনি তিনবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি এখন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এনের (পিএমএল-এন) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আবেগপ্রবণ শাহবাজ শরিফ একজন কঠোর প্রশাসক। তিনি ভাষণে বিপ্লবী কবিতা উদ্ধৃত করার জন্য বেশ পরিচিত। তাঁকে একজন কাজপাগল মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শাহবাজের একাধিক বিবাহ এবং লন্ডন ও দুবাইতে তাঁর বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টগুলো নিয়ে খবরের শিরোনাম হলেও তিনি এখনো জনপ্রিয়। 

 আসিফ আলি জারদারি 

আসিফ আলি জারদারি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর স্বামী। একটি ধনী সিন্ধু পরিবার থেকে আসা জারদারি তাঁর প্লেবয় লাইফস্টাইলের জন্য বেশি পরিচিত ছিলেন। বেনজির ভুট্টো প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কিছুদিন আগেই তাঁকে বিয়ে করেন আসিফ আলি জারদারি।

সরকারি কাজের জন্য ১০ শতাংশ কমিশন নেওয়ার কারণে পাকিস্তানে ‘মিস্টার টেন পার্সেন্ট’ নামে পরিচিতি পান আসিফ আলি জারদারি। দুর্নীতি, মাদক চোরাচালান ও খুনের অভিযোগে দুবার জেল খেটেছেন বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলি জারদারি। তিনি বর্তমানে পাকিস্তান পিপলস পার্টির সহসভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। 

বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি

বেনজির ভুট্টো ও আসিফ আলি জারদারির ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। বেনজির ভুট্টোকে যখন ২০০৭ সালে হত্যা করা হয়, তখন বিলাওয়াল ১৯ বছর বয়সী ছিলেন। 

অক্সফোর্ডে পড়ুয়া বিলাওয়াল পাকিস্তানে প্রগতিশীল হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি প্রায়শই নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন। পাকিস্তানের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশির বয়স ২২ বা তার নিচে। ভুট্টো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব তরুণের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। যদিও উর্দুতে ঠিকভাবে কথা বলতে না পারার কারণে প্রায়শই তাঁকে ট্রলের শিকার হতে হয়। 

মাওলানা ফজলুর রহমান

পাকিস্তানের জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান। একজন কট্টরপন্থী রাজনীতিবিদ হিসেবে জীবন শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের এই ধর্মগুরু। পরে অবশ্য ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠন করতে দেখা গেছে ফজলুর রহমানকে। 

পাকিস্তানের লাখ লাখ মাদ্রাসাশিক্ষার্থীকে জড়ো করার সামর্থ্য ফজলুর রহমানরে থাকলেও তাঁর দল জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের কখনোই সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত সমর্থন পায়নি। তবে পাকিস্তানের রাজনীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এই ফজলুর রহমান। 

ইমরান খানের ঘোর বিরোধী ছিলেন ফজলুর রহমান। ব্রিটিশ জেমিমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করায় ইমরান খানকে ইহুদি বলে আখ্যায়িত করেন মাওলানা ফজলুর রহমান। জ্বালানি লাইসেন্স সংক্রান্ত দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ইমরান খান তাঁকে মোল্লা ডিজেল বলে সম্বোধন করতেন। 

সূত্র: এএফপি

পাকিস্তান সম্পর্কিত পড়ুন:

তিন বাহিনীর প্রধান হয়েই পাকিস্তানকে ‘অনন্য উচ্চতায়’ পৌঁছানোর ঘোষণা আসিম মুনিরের

আরও ক্ষমতাধর আসিম মুনির, হলেন পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান

ইমরান খানকে মেরে ফেললে কী প্রতিক্রিয়া হয়, দেখতে চেয়েছে সরকার—বোনের দাবি

বোনের সঙ্গে ২০ মিনিটের আলাপে আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে ইমরান খানের অভিযোগ

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

অবশেষে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা হলো বোনের

নিষেধাজ্ঞা ভেঙে ইসলামাবাদ-রাওয়ালপিন্ডিতে ইমরানের দলের বিক্ষোভের ডাক

ইমরান খানের এমন কিছু ঘটেছে, যা পরিবর্তন করা যাচ্ছে না—ছেলেদের আশঙ্কা

পাকিস্তানে দূতাবাস বন্ধের ঘোষণা দিল ফিনল্যান্ড

অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ: পাকিস্তান রাষ্ট্রে নিজেদের উপেক্ষিত মনে করছে তরুণেরা