হোম > বিশ্ব > পাকিস্তান

আব্দুল কাদিরকে 'বিপজ্জনক' মনে করত পশ্চিমা বিশ্ব

গতকাল রোববার পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির জনক হিসেবে পরিচিত আব্দুল কাদির খানের মৃত্যু হয়। পাকিস্তানকে বিশ্বের প্রথম মুসলিম পরমাণু শক্তিধর দেশ বানানোর কৃতিত্ব তাঁর। নিজ দেশে তিনি জাতীয় বীর হিসেবে নন্দিত, কিন্তু পশ্চিমে তিনি নিন্দিত। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, আব্দুল কাদির খান গত অর্ধশতাব্দী ধরে বিশ্বের নিরাপত্তার প্রশ্নে একজন আলোচিত ব্যক্তি। আব্দুল কাদির খানকে আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে তুলনা করেছেন সিআইএর সাবেক পরিচালক জর্জ টেনেন্ট। তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী, কাদির খান আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের চেয়ে ‘কম বিপজ্জনক ছিলেন না’। 

আব্দুল কাদির খানের জন্ম ১৯৩৬ সালের ২৭শে এপ্রিল। তিনি অবিভক্ত ভারতের ভোপালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় পরিবারের সঙ্গে তিনি পাকিস্তানে চলে যান। ৭০ এর দশকে তিনি ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডসে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পরাজয় হয় এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের পারমাণবিক অগ্রগতি এ দুইয়ে মিলে শঙ্কিত হয়ে পড়ে পাকিস্তান। সে সময়ে দেশটি পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করে। 

বিবিসি বলছে, পাকিস্তান যখন পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করে আব্দুল কাদির খান তখন ইউরোপীয় একটি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। সেই কোম্পানি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য সেন্ট্রিফিউজ তৈরি করত। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পরই তা পারমাণবিক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এমনকি বোমা তৈরিতেও ব্যবহার করা যায়। সেই কোম্পানির সেন্ট্রিফিউজ তৈরির সবচেয়ে আধুনিক নকশা নকল করে তা নিয়ে নিজ দেশে চলে আসেন আব্দুল কাদির খান। তিনি ইউরোপের ব্যবসায়ীদের নিয়ে গোপন নেটওয়ার্ক তৈরি করেন। যারা তাঁকে পরমাণু বোমা তৈরির নানা উপাদান সরবরাহ করত। আব্দুল কাদির খানকে পাকিস্তানের পরমাণু বোমার জনক হিসেবে বর্ণনা করা হলেও তিনি ছিলেন এই কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজনের মধ্যে একজন। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের হুমকি থেকে পাকিস্তানকে নিরাপদে রাখতে আব্দুল কাদির খানের নিজস্ব পদ্ধতিই তাঁকে জাতীয় বীরে পরিণত করে। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আব্দুল কাদির খান বেশ কয়েকবার উত্তর কোরিয়া সফর করেন। ধারণা করা হয়, দেশটির সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির সঙ্গে পরমাণু প্রযুক্তির বিনিময় হয়েছে। ২০০৪ সালে উত্তর কোরিয়া, ইরান এবং লিবিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির তথ্য পাচার করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি ওই অভিযোগ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ তাঁকে ক্ষমা করেন, কিন্তু ২০০৯ সাল পর্যন্ত তাঁকে অন্তরীণ রাখা হয়। 

অনেকের মতে, শুধুমাত্র অর্থের কারণেই এসব করতেন তিনি। তবে এ বিষয়টি ওতটা সোজা নয়। কেননা পাকিস্তান সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেই কাজ করতেন কাদির খান। তিনি মূলত পরমাণু শক্তিতে পশ্চিমা দেশগুলোর যে একক আধিপত্য সেটি ভেঙে দিতে চাইতেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, পরমাণু বোমা কেনো শুধু নির্দিষ্ট কারও কাছে থাকবে, অন্যদের কাছে কোনো সেটি থাকতে পারবে না। পশ্চিমাদের এই দ্বিচারিতার সমালোচনা করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, 'আমি কোনো পাগলও নই, হেলাফেলার ব্যক্তিও নই। তাঁরা আমাকে অপছন্দ করে এবং নানা কিছুর জন্য আমাকে দায়ী করে। কারণ আমি তাঁদের কৌশল সবার সামনে তুলে ধরেছি।'   

 

   

 

গাজা স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগ দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান, তবে আপত্তি হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্তে

পাকিস্তানে ফিরতে চান ইমরান খানের দুই পুত্র, ভিসার আবেদন

লিবিয়ার হাফতারকে যুদ্ধবিমানসহ ৪০০ কোটি ডলারের বেশি সামরিক সরঞ্জাম দিচ্ছে পাকিস্তান

‘ন্যায়বিচারের দুয়ার বন্ধ’, রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিতে বললেন ইমরান খান

নতুন মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির ১৭ বছরের কারাদণ্ড

ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে বিভিন্ন দেশ থেকে ৩২ হাজারের বেশি পাকিস্তানি বহিষ্কার

ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার দৃশ্যপটে ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, পাকিস্তানে গৃহদাহের শঙ্কা

ইমরান খানের জন্য ইলন মাস্কের কাছে জেমিমার আবেদন

দেশভাগের পর এই প্রথম পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত পাঠদান

ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সাবেক গোয়েন্দাপ্রধানের ১৪ বছর কারাদণ্ড