প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পর বিরোধী দলের নেতারা পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ শরিফের নাম ঘোষণা করেছেন। মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এবং ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শাহবাজ শরিফ ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সংসদে ভাষণও দিয়েছেন।
এদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা শেরি রেহমান একটি ভিডিও টুইটে দাবি করেছেন যে বিরোধী দলের ১৯৭ জন সদস্য পাকিস্তান মুসলিম লীগের আয়াজ সাদিককে নতুন স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত করেছেন।
সাদিক নতুন স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার পর ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর পুনরায় ভোটাভুটি চালু করেন। ততক্ষণে ক্ষমতাসীন জোটের সদস্যরা সংসদ ছেড়ে চলে যান। তবে বিরোধীরা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গতকাল রোববার পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তানের বিরোধী দলের নেতারা। তাঁরা ইমরান খানের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ এবং দেশের সংবিধানকে নস্যাৎ করার অভিযোগ এনেছেন।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অনাস্থা ভোট সফল হলে বিরোধী দলের নেতা শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে আশা করা হয়েছিল। গতকাল পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে তা নাকচ করে দেন। এরপর ক্ষুব্ধ শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘ইমরান খান সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন এবং সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন।’
শাহবাজ শরিফ টুইটার পোস্টে লিখেছেন, ‘এটি ভয়ংকর রাষ্ট্রদ্রোহিতার চেয়ে কম কিছু নয়। ইমরান খান দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। সংবিধান লঙ্ঘনের পরিণতি হবে ভয়াবহ।’
এদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, ‘বিরোধীরা সংসদ ছেড়ে যাবে না।’ তিনিও ইমরান খানের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন। তিনিও এক টুইটার পোস্টে লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের সংবিধান রক্ষা ও সুসংহত রাখতে সকল প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানাই।’
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ শরিফও ইমরান খান এবং তার সরকারের সদস্যদের বিরুদ্ধে উচ্চ রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ করেছেন। তিনি সংবিধানের একটি ধারা উল্লেখ করে টুইটারে লিখেছেন, ‘কেউ সংবিধান স্থগিত বা বিকৃত করার চেষ্টা করলে উচ্চ রাষ্ট্রদ্রোহের জন্য দোষী হবে। তাদের অবশ্যই সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬ এর অধীনে বিচার হওয়া উচিত।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।