ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে ১১ জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছে এবং বেসামরিক নাগরিকসহ আহত হয়েছে ৭৮ জন। আজ মঙ্গলবার দেশটির সামরিক বাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) কাছে পেহেলগাম হামলার জন্য ভারত ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করার পরই দুই দেশের মধ্যে এই সামরিক সংঘাতের সূত্রপাত হয়। গত ৬-৭ মে রাতের দিকে নয়াদিল্লি ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর নামে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালায়, যার ফলে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর উভয় পক্ষ এক সপ্তাহ ধরে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে উভয় পক্ষ অস্ত্র বিরতিতে সম্মত হয়।
গত শনিবার, যখন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন।
আইএসপিআর-এর ভাষ্য অনুযায়ী, ভারতীয় আগ্রাসনে ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সাতজন নারী ও ১৫টি শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১২১ জন।
বিবৃতিতে নিহত সেনা সদস্যদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন—নায়েক আব্দুল রেহমান, ল্যান্স নায়েক দিলাওয়ার খান, ল্যান্স নায়েক ইকরামুল্লাহ, নায়েক ওয়াকার খালিদ, সিপাহি মুহাম্মদ আদিল আকবর এবং সিপাহি নিসার।
পাকিস্তান বিমানবাহিনীর যে সদস্যরা নিহত হয়েছেন তাঁরা হলেন—স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ, চিফ টেকনিশিয়ান আওরঙ্গজেব, সিনিয়র টেকনিশিয়ান নাজিব, কর্পোরাল টেকনিশিয়ান ফারুক এবং সিনিয়র টেকনিশিয়ান মুবাশির।
আইএসপিআর বিবৃতিতে আরও বলেছে, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী ‘মারকা-ই-হক’-এর অধীনে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে জবাব দিয়েছে। ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসৌস’-এর মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে।
আইএসপিআর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে চ্যালেঞ্জ করার যেকোনো ধরনের প্রচেষ্টাকে ভবিষ্যতে তাৎক্ষণিক কঠিন জবাব দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসৌস’-এর ‘দুর্দান্ত সাফল্য’ স্মরণে প্রতি বছর ১০ মে ‘ইয়াওম-ই-মার্ক-ই-হক’ উদ্যাপনের ঘোষণা করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, আগামী ১৬ মে, শুক্রবার বিশেষ দিবস হিসেবে পালন করা হবে।