চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন, অর্থাৎ গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে সেই নির্বাচনকে ‘মাদার অব অল সিলেকশন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। আজ মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে ইমরান খানের একটি মামলার শুনানির আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইমরান খান এ কথা বলেন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমের সহায়তায় ইমরান খান তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ রুখে দিতে পূর্ণ শক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় তিনি ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে একটি বিশেষ দলকে ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে’ উল্লেখ করে বলেন, কার্যত একটি মাত্র দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই নির্বাচন মাদার অব অল সিলেকশনে পরিণত হয়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের মাঝপথেই আদিয়ালা কারাগারের সুপার আসাদ ওয়ারিক বাধা দেন। তিনি এ সময় ইমরান খানকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতেও বাধা দেন। জবাবে ইমরান খান বলেন, গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারা তাঁর অধিকার। পরে আসাদ ওয়ারিক ইমরান খানকে মনে করিয়ে দেন, সাংবাদিকেরা কেবল তাঁর মামলার বিষয়েই সংবাদ সংগ্রহ করতে আইনত বাধ্য, রাজনৈতিক বক্তব্য শুনতে নয়। পরে জেল সুপার সাংবাদিকদের সেখান থেকে সরিয়ে নেন।
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি ইমরান খান দাবি করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ‘দুই আম্পায়ারের’ কাছ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা পাচ্ছেন। এমনকি সেই আম্পায়ারদের একজন সম্প্রতি নওয়াজের পক্ষ হয়ে একটি ‘নো-বল’ও ডেকেছেন।
সম্প্রতি পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের নির্বাচনে লড়া নিয়ে বেশ ঝামেলা করেছে। বিশেষ করে, পিটিআইয়ের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল, পরে আবার ফিরিয়ে নেওয়া এবং ইমরান খানের দলের নির্বাচনী প্রতীক ব্যাট বাতিল করার মতো বিভিন্ন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
এ ছাড়া পাকিস্তানের বিচার বিভাগ নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে চলমান বেশ কয়েকটি মামলায় রায় ও জামিন নিয়ে নজিরবিহীন কিছু সিদ্ধান্ত দিয়েছে। বিপরীতে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে কারাগারে আদালত স্থাপন করে ইমরান খানের মামলার কার্যক্রম চালানোও হয়েছে।
ইমরান খান অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের রাজনীতিতে যা ঘটছে, তার সবকিছুই মূলত তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) কোণঠাসা করে নওয়াজ শরিফ ও তাঁর দলকে (পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ) বাড়তি সুবিধা দেওয়ার জন্যই করা হচ্ছে। আর এ সবই হচ্ছে তথাকথিত ‘লন্ডন পরিকল্পনার’ অংশ হিসেবে।