পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তানে রেলপথে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ট্রেনে হামলা চালিয়েছিল বিদ্রোহীরা। এই হামলার দায় স্বীকার করা বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ট্রেন ছিনতাইয়ের দৃশ্য সংবলিত একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, ট্রেনটিকে একটি টানেলের প্রবেশপথে আটকে দিয়ে বিদ্রোহীরা এটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এতে ৪৫০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন। তবে কতজন এখনো জিম্মি আছেন—তা নিশ্চিত করা যায়নি। পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী ট্রেন যাত্রীদের উদ্ধারে সর্বাত্মক অভিযান চালাচ্ছে।
এদিকে বিএলএ-এর প্রকাশ করা ১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, টানেলে প্রবেশের আগে ট্রেনটির অগ্রভাগে একটি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ভারী অস্ত্র নিয়ে বিদ্রোহীরা এ সময় আশপাশের পাহাড়ে অবস্থান করছিল। আরও দেখা যায়, ট্রেনের যাত্রীরা পাহাড়ের পটভূমিতে মাটিতে বসে আছেন। আর বিদ্রোহীরা অস্ত্র হাতে তাদের পাহারা দিচ্ছে।
দুই দিনের অভিযানে পাকিস্তানি বাহিনী এখন পর্যন্ত ১৯০ জন জিম্মিকে মুক্ত করতে পেরেছে। মুক্তি হওয়া যাত্রীরা জানিয়েছেন, নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে তাদের দীর্ঘ পথ হাঁটতে হয়েছে। মায়ের সঙ্গে ওই ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন মুহাম্মদ বিলাল। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আমাদের কিভাবে পালাতে হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এটা ছিল ভয়াবহ।’
এই হামলার দায় সঙ্গে সঙ্গেই স্বীকার করেছে বালুচ লিবারেশন আর্মি। তারা দাবি করেছে, বন্দী সদস্যদের মুক্তির বিনিময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দিবিনিময় চায়।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে দরিদ্র বেলুচিস্তানে বিদ্রোহীদের দমনে লড়াই করছে। তবে ২০২১ সালে তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে দেশটির পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে সহিংসতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
বিএলএ অভিযোগ করে আসছে, ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ বাইরের লোকেরা শোষণ করছে। তাই তারা পাকিস্তানের অন্যান্য অঞ্চল থেকে আগত ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে হামলা বাড়িয়েছে।
গত বছরেও বিদ্রোহীরা একযোগে রাতভর হামলা চালিয়েছিল। সে সময় তারা একটি প্রধান মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল এবং অন্য জাতিগোষ্ঠীর যাত্রীদের হত্যা করে দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল।
পাঞ্জাবি ও সিন্ধি শ্রমিকদের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিদেশি অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকেও তারা নিয়মিতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।