গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি ও মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। হামাস রেডক্রসের হাতে আরও চারজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। ফলে মোট মৃত জিম্মির সংখ্যা দাঁড়াল ৮-এ। এদিকে গাজায় ভয়াবহ খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটের মধ্যে তুরস্ক ৯০০ টন মানবিক সাহায্যের একটি জাহাজ পাঠিয়েছে।
জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া ধীর হওয়ায় ইসরায়েল ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, এই ধীরগতির কারণে তারা গাজায় অনুমোদিত ত্রাণ ট্রাকের সংখ্যা অর্ধেক করে দেবে এবং রাফাহ ক্রসিং খোলার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করবে। এখনো প্রায় ২০ জন জিম্মির মরদেহ গাজায় রয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
গাজার মানুষের জন্য খাদ্য ও শিশুর ফর্মুলা নিয়ে ‘দ্য গুডনেস’ নামের ত্রাণবাহী জাহাজ তুরস্কের মারসিন বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছে। আনাদোলু সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাহাজটিতে প্রায় ৯০০ টন মানবিক ত্রাণ রয়েছে।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১৭টি এনজিও এবং মিসরের রেড ক্রিসেন্টের সঙ্গে সমন্বয় করে এই মানবিক সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, তুরস্ক সরকার গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির একজন মূল সমর্থক এবং মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে।
তবে এই ত্রাণবাহী জাহাজটি আগের ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’ মিশনের (যেমন ২০১০ সালে ইসরায়েলি কমান্ডোদের হামলায় আক্রান্ত মাভি মারমারা) মতো অবরোধ ভেঙে সরাসরি গাজায় যাওয়ার চেষ্টা করছে না; বরং ‘দ্য গুডনেস’ মিসরীয় আল আরিশ বন্দরের মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ করবে।
ত্রাণ সরবরাহের এই প্রচেষ্টার মধ্যেও গাজার অভ্যন্তরে মানবিক পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পদ্ধতিগতভাবে গাজার স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যার ফলে তা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। এর মধ্যে হাজার হাজার মানুষের দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন ও চিকিৎসা প্রয়োজন, যাদের অনেকের অঙ্গহানি হয়েছে, অনেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও অন্ধ হয়েছে।
প্রায় ৩৮টি হাসপাতাল এবং কয়েক ডজন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ধ্বংস বা বন্ধ হতে বাধ্য হয়েছে। ফলে সেখানকার বাসিন্দাদের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ প্রায় নেই বললে চলে।
পাশাপাশি গাজাজুড়ে তীব্র দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি চার শিশুর মধ্যে একটি মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, অনাহার দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে।
আরও খবর পড়ুন: