হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

গাজাবাসীর প্রাণহানির জন্য হামাসকেই দায়ী করলেন নেতানিয়াহু

হামাসের মুখপাত্র ওসামা হামদান ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

‘গাজায় হামলার এটা কেবল শুরু, সামনের দিনগুলোতে মাত্রা আরও কয়েক গুন বাড়বে’—ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে উদ্দেশ করে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী—আইডিএফের আগ্রাসনে গাজায় এক দিনেই ৪ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এক ভিডিওবার্তায় এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভিডিওবার্তায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী হামাসকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, তাদের ওপর ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি প্রয়োগ করা হবে। পরবর্তীতে যুদ্ধবিরতি নিয়ে যদি কোনো আলোচনা হয়, তাহলে তা যুদ্ধের মধ্যেই হতে হবে।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতা হামাস টের পেয়েছে। আমি একই সঙ্গে হামাসকে নিশ্চিত করে বলতে চাই—এটা কেবল শুরু। হামাসকে পুরোপুরিভাবে নির্মূল করা, সব জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করাসহ আমাদের সব লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলি অভিযান আরও শক্তিশালী হবে। সেনাবাহিনী নিশ্চিত করবে যাতে গাজা আর কোনো দিনই ইসরায়েলের জন্য হুমকি হতে না পারে।’

এ সময় গাজায় প্রাণহানির জন্য হামাসকেই দায়ী করেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিনিধির সব প্রস্তাব আমরা মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু হামাস তা প্রত্যাখ্যান করেছে। সে কারণেই গতকাল হামাসের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান আবার শুরু হয়েছে। গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুর দায় তাদেরই, ইসরায়েলের নয়। গাজাবাসীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলছি। কারণ, প্রতিটি বেসামরিকের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক।’

এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারিতে টলছে না ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি প্রশাসনের প্রতি তাঁদের স্পষ্ট বার্তা—কোনোভাবেই যুদ্ধবিরতির শর্ত থেকে সরে আসবে না তারা। হামাসের মুখপাত্র ওসামা হামদান আল-জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েল যদি ভাবে এভাবে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে তারা যুদ্ধবিরতির চুক্তি পরিবর্তন করতে পারবে, তাহলে তারা কল্পনার জগতে বাস করছে। ওসামা বলেন, ‘ইসরায়েলই চুক্তি ভঙ্গ করেছে। এখন তারা যদি ভাবে, গাজায় হামলা চালিয়ে স্বার্থ আদায় করে নেবে, তাহলে ভুল ভাবছে। এমন আগ্রাসী আচরণ দিয়ে ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্র তাদের কাঙ্ক্ষিত ফল কখনোই পাবে না।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী এলাকায় নজিরবিহীন হামলা চালায়। এর জবাবে গাজায় সর্বাত্মক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। বিরতিহীন ১৫ মাসে ইসরায়েলি হামলায় ৪৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলের নিন্দা-সমালোচনার পরও পুরোদমে আগ্রাসন চালিয়ে গেছে ইসরায়েলি প্রশাসন। তাদের সাফাই ছিল—বেসামরিক জনগণ নয়, ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্য ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হামাস। হামাসের গোপন আস্তানা, সুড়ঙ্গ আছে—এমন সন্দেহে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একের পর হাসপাতাল আর জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলগুলোতে হামলা চালিয়ে গেছে।

অবশেষে গত ১৯ জানুয়ারি বিভিন্ন পক্ষের ব্যাপক তোড়জোড়ে কার্যকর হয় ৪২ দিন করে তিন ধাপের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ। তবে, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মধ্যেও বিভিন্ন অভিযোগে গাজাবাসীকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। এ ছাড়া, যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপগুলো নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী শুরু থেকেই গড়িমসি করেছেন। প্রথম ধাপের ১৬ তম দিনে দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরুর কথা থাকলেও নানা টালবাহানায় সেই আলাপ শুরু হয় প্রথম ধাপ শেষ হওয়ারও ১০ দিন পর।

গত ১ মার্চ যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। পরে, উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে বন্ধ করে দেওয়া হয় পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহও। এরপর গতকাল মঙ্গলবার আবার সভ্যতার মুখোশ খুলে বর্বর রূপ দেখাল তেলআবিব। যুদ্ধবিরতির আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে গাজার নিরীহ বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে আবারও হামলা চালাতে শুরু করেছে আইডিএফ।

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ফিলিস্তিনিদের প্রলোভনে ফেলে গাজা খালি করার মিশনে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ ভুয়া সংস্থা

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন

পশ্চিম তীরে এক বছরে ১৫০০ বাড়ি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভাঙবে আরও ২৫টি

বৃষ্টি, বন্যা আর আবর্জনা: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা