ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলায় ১২ দিন ধরে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বিবদমান দুই পক্ষ। তবে, ইরান বা ইসরায়েল কোনো পক্ষই এ দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেনি। কিছুক্ষণ পর ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সামাজিক মাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে কোনো যুদ্ধবিরতি হয়নি। কিন্তু, ইসরায়েল যদি আগ্রাসন বন্ধ করে, ইরানও হামলা থামাবে।
এর কিছুক্ষণ পরই এক্সে আরেকটি পোস্ট করে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেন, ‘শেষ মুহূর্ত ভোর ৪টা পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সব ইরানির সঙ্গে আমিও আমাদের সাহসী যোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই যোদ্ধারা দেশের প্রতিরক্ষায় শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াইয়ে প্রস্তুত থাকে। এবং শত্রুর প্রতিটি হামলার উপযুক্ত জবাব দিয়ে এসেছে তারা।’
আরাঘচির এই পোস্টের পরই ইসরায়েলি ভূখণ্ডে মুহুর্মুহু হামলা চালানো শুরু করে ইরান। একের পর এক মিসাইল ব্যারেজ আঘাত হানতে শুরু করে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে। এক ঘণ্টার ব্যবধানে ৬ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তেহরান। শেষ মুহূর্তে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিরশেবায় নিহত হয়েছে তিনজন, আহত আরও অনেকে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির আগে ইসরায়েলের হামলায় ইরানের আরও এক পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি। সংবাদমাধ্যমটির তথ্যমতে, নিহত ওই বিজ্ঞানীর নাম সেদিঘি সাবের।
এর আগে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর ইরাকের চারটি স্থানে হামলার ঘটনা ঘটে। ইরাকের রাজধানী বাগদাদের উত্তরে তাজি সামরিক ঘাঁটি, বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাকা ভিক্টরি ঘাঁটি, বালাদ সামরিক ঘাঁটি ও ইমাম আলি ঘাঁটিতে চালানো হয় এসব হামলা। তবে, এই হামলার পেছনে ইরান নেই বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তাদের ভাষ্য—চলমান উত্তেজনার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইরাকের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এসব হামলা চালিয়ে থাকতে পারে।