দীর্ঘ সময় ধরে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না নাথ পরিবারের কাউকে। চিন্তিত প্রতিবেশী ও স্বজনেরা বাধ্য হয়ে বাড়ির গেট ভেঙে প্রবেশ করে দেখলেন বাবা-মা ও ছেলের নিথর দেহ পড়ে আছে বাড়িতে। গত ১১ সেপ্টেম্বর ভারতের আসামের দরং জেলার সিপাঝাড় থানার ঐতিহাসিক নারিকালী মন্দির এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ওই বাড়িতে থাকতেন ৫৫ বছর বয়সী দীপক নাথ। প্রতিবেশী ও স্বজনেরা বাড়িতে ঢুকে সীমানাপ্রাচীরের পাশে প্রথমে তাঁর মরদেহটি দেখতে পান। তবে দীপক নাথের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
বাড়িতে ঢুকে দেখেন তাঁর স্ত্রী প্রতিমা নাথের মরদেহ পড়ে আছে। গলায় গভীর ক্ষতচিহ্ন। এরপর সন্ধান মেলে ১৩ বছর বয়সী সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ধৃতি রাজ নাথের খণ্ডিত মরদেহের।
গ্রামবাসী জানায়, দীপক নাথ পরিবার নিয়ে নিভৃতে জীবনযাপন করতেন। কারও সঙ্গে তাঁর প্রকাশ্য শত্রুতা বা বড় কোনো আর্থিক দ্বন্দ্বের কথা তাঁরা জানেন না। হঠাৎ করে এমনভাবে পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া শুধু ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ঘটনার সঙ্গে কালোবাজারি চক্র, জমি বা সম্পত্তিসংক্রান্ত বিবাদ কিংবা স্থানীয় কোনো গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনা তদন্তে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রোজি তালুকদারের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে। তবে এর পেছনে কারা রয়েছে তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।
ধৃতি রাজের স্কুলের সহপাঠীরা তার অকালে মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ। তাদের কথায়, ধৃতি রাজ ছিল ভীষণ প্রাণবন্ত একটি ছেলে, পড়াশোনায় যেমন ভালো ছিল, তেমনি খেলাধুলায়ও। সবার সঙ্গে মিশে যেত।
এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, সম্প্রতি আসামে অপরাধ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, চুরি-ডাকাতিসহ একাধিক অপরাধ ঘটছে। পুলিশের উপস্থিতিতেও এসব ঘটনা ঘটছে।