নয়াদিল্লি: করোনা বিপর্যয়ের মধ্যেই নতুন জীবাণু ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ আতঙ্কে কাঁপছে ভারত। দেশটির মহারাষ্ট্র রাজ্যে এ পর্যন্ত ছত্রাকটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫০০ জন, এর মধ্যে মারা গেছেন ৯০ জন। এটি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। রয়েছে ওষুধের সঙ্কটও। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের প্রত্যেকটি রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণকে মহামারি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিটি রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণকে ‘মহামারি রোগ আইন’ অনুযায়ী মহামারি ঘোষণা করার জন্য চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চিঠিতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেলে সেটি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিক জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, মিউকরমাইকোসিসের (ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ) শনাক্তকরণ, নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নির্দেশিকা সব সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজকে মেনে চলতে হবে। এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কোভিড রোগীদের দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা ও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে।
ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড পজিটিভ রোগীদের মধ্যে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাঁদের এ রোগে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। করোনা রোগীর সেরে ওঠার পরে অনেকের দেহেই এই মিউকরমাইসিসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মুখে আক্রমণ করতে পারে। নাক, চোখ ও মস্তিষ্কেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ সংক্রমণে মাথাব্যথা, এক নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কাশির সাথে রক্ত, শ্বাসকষ্ট, মাথার এক পাশে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, দাঁতে ব্যথাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। সংক্রমণে রোগী দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন। এটি ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ও যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁদের কারো যদি সাইনাসের সমস্যা, এক নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, দাঁতে ব্যথা ও দাঁত ফাঁকা হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয় তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশের আগেই রাজস্থান ও তেলেঙ্গানা রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণকে মহামারি ঘোষণা করা হয়েছে।