ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে এক মামলার রায়ে আজ শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, বাংলা ভাষায় কথা বলেন বলেই কাউকে বিদেশি মনে করা যাবে না।
আদালতের এই আদেশকে ভারতের সংবিধান ও মানবাধিকারের আলোকে বড় স্বীকৃতি বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
এই মামলা শুরু হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলাম ও পশ্চিমবঙ্গ মাইগ্র্যান্ট ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের আবেদনের ভিত্তিতে। তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করা হচ্ছে; অথচ তাঁদের নাগরিকত্বের বৈধ কাগজপত্র দেখানোর সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না।
আজ সুপ্রিম কোর্ট জানান, বাংলা ও পাঞ্জাবি ভাষাভাষী মানুষের একটি ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে। সীমান্ত বিভাজন হলেও ভাষাকে কোনো নাগরিকত্বের মাপকাঠি বানানো যায় না। আদালত স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে, ‘It cannot be on the basis of language.’
একই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, এসব শ্রমিকের আটক বা ডিপোর্টেশন-সংক্রান্ত আবেদনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনতে হবে।
আটকে থাকা শ্রমিকদের দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ খুলে দিল এই নির্দেশ।
এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা যুক্তি দিয়েছেন, ভারত যেন বিশ্বের অবৈধ অভিবাসীদের রাজধানী না হয়ে যায়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।
তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল স্পষ্ট, ভাষা দিয়ে কারও নাগরিকত্ব প্রমাণ বা অস্বীকার করা সম্ভব নয়।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রায় শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা লাখো বাংলা ভাষাভাষী শ্রমিকদের জন্য আশার আলো হয়ে এল। পরিবারের রুটি-রুজির জন্য যাঁরা দূরে গিয়ে কাজ করেন, তাঁদের মর্যাদা ও ন্যায্য অধিকার রক্ষায় এটি বড় পদক্ষেপ।