হোম > বিশ্ব > ভারত

ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্যের ছড়াছড়ি

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করতে থাকে বাংলাদেশে ইসলামি শক্তি হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও সহিংসতা করছে। এ ধরনের সংবাদকে বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা। 

সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর নিবন্ধ এবং ভিডিওগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে টাইমস গ্রুপের মালিকানাধীন ‘মিরর নাউ’-এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়—বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা? 

মিরর নাউয়ের ভিডিওটিতে চারটি বাড়িতে সহিংসতা এবং অগ্নিসংযোগের ফুটেজ দেখা যায়। তবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো সত্যি হলেও ওই চারটি বাড়ির মধ্যে দুটি বাড়ি ছিল মুসলিম মালিকানাধীন। শুধু তা–ই নয়, একটি বাড়ি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর। 

ভিডিওটিতে কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই আরও দাবি করা হয়, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করে ২৪ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। 

দাবিগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে গিয়ে আল জাজিরা জানতে পেরেছে, গত সোমবার হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে এখন পর্যন্ত দুজন হিন্দু হত্যার শিকার হয়েছেন। তবে তাঁরা সংখ্যালঘু হিসেবে হামলার শিকার হয়েছেন, এমন নয়। নিহত ওই দুজনের একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং অন্যজন আওয়ামী লীগের কর্মী। আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার নিপীড়ন চালানোর জন্য পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা গণরোষের মুখে পড়েছিলেন। 

এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির প্রধান শুভেন্দু অধিকারীর উদ্ধৃতি দিয়ে দাবি করা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এক কোটির বেশি শরণার্থী রাজ্যটিতে অনুপ্রবেশ করতে পারে। তবে এ ধরনের কোনো পরিস্থিতি এখনো কোথাও দেখা যায়নি বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। 

ভারতের মোদি সরকারের ঘনিষ্ঠ সংবাদ সংস্থা হিসেবে পরিচিত এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে দেশটির একজন ছাত্রনেতাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানটি বাংলাদেশের শত্রুদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। 

টাইমস অব ইন্ডিয়ার আরেকটি উদ্ভট নিবন্ধে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছে বাংলাদেশের ইসলামপন্থী দল জামায়াতে ইসলামী। 

এসব বিষয়ে বাংলাদেশি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত জানতে চেয়েছিল আল জাজিরা। এ ক্ষেত্রে বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান মত দিয়েছেন—ভারতীয় গণমাধ্যম ইসলামভীতির দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিবেদনগুলো করেছে। তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন যে গণ-অভ্যুত্থানকে উসকে দিয়েছিল এবং সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করেছিল, তা সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় আন্দোলন। কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যম কোনো না কোনোভাবে তাদের ইসলামফোবিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে পুরো দৃশ্যপটকে ব্যাখ্যা করছে।’ 

গত সোমবার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ নিবন্ধে দাবি করা হয়, বাংলাদেশের বিক্ষোভ পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। কারণ, তারা রাজনৈতিক সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশকে একটি ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাইছে। 

শুধু পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থাই নয়, এই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে চীনা সংযোগের কথাও বলছে বেশ কিছু গণমাধ্যম এবং এগুলোর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

ভারতীয়দের বিরুদ্ধে এইচ-১বি ভিসায় ব্যাপক জালিয়াতি ও ঘুষের অভিযোগ

বর্তমান বাংলাদেশ একাত্তরের পর সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ: ভারতের সংসদীয় কমিটি

অবসরের আগে ফরমায়েশি রায়, বিচারকদের অসততায় উদ্বিগ্ন ভারতের প্রধান বিচারপতি

মুসলিম স্ত্রীকে নিয়ে বিবাদ, ভারতে বাবা-মাকে মেরে খণ্ডিত দেহ নদীতে ফেলল ছেলে

আমরা চুপ থাকব না, উচিত শিক্ষা দেব—সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হাসনাতের হুমকির জবাবে হিমন্ত

নিকাব বিতর্ক: মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমাজবাদী পার্টির নেত্রীর থানায় অভিযোগ

নিকাব বিতর্ক: বিহারের নীতীশের পক্ষে সাফাই গাইলেন উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী

টান দিয়ে নারীর মুখের নিকাব সরিয়ে তোপের মুখে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার