ভারতের দিল্লিতে বেশ কয়েক দিন আগে শ্রদ্ধা ওয়াকার নামে এক তরুণীকে তাঁর প্রেমিক আফতাব পুনেওয়ালা শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ১৮ টুকরো করে জঙ্গলে ফেলে দিয়েছিলেন। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তকারীরা বলেছেন, দুই বছর আগেই শ্রদ্ধা ওয়াকার মহারাষ্ট্রের ভাসাইয়ের তিলুঞ্জ পুলিশের কাছে ‘তাঁকে মেরে কুটি কুটি করা হবে’ বলে অভিযোগ করেছিলেন। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, তাঁরা (শ্রদ্ধা ও আফতাব) ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেই ফ্ল্যাটে মারধরের শিকার হওয়ার পর শ্রদ্ধা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছিলেন, আফতাবের পরিবার তাঁর সহিংস আচরণ সম্পর্কে জানত। স্থানীয় পুলিশ বলেছে, শ্রদ্ধা পরে আরও একটি লিখিত বিবৃতি দিয়েছিলেন। সেখানে বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে আর কোনো ঝগড়া নেই।’ এরপর তিনি পুলিশকে আফতাবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অনুরোধ করেন।
২০২০ সালের ২৩ নভেম্বরে করা এই অভিযোগের সঙ্গে তাঁর সহকর্মী করণকে হোয়াটসঅ্যাপে বলা কথার মিল রয়েছে। ওই সময়ে তিনি করণকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত মুখের একটি ছবিও শেয়ার করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘আজ সে আমাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেছিল এবং সে বারবার বলছিল আমাকে মেরে ফেলবে, আমাকে টুকরো টুকরো করে ফেলে দেবে। ছয় মাস হয়ে গেল সে আমাকে এভাবে মারধর করছে। আমি পুলিশকে বলতে সাহস পাইনি, কারণ সে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল।’
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে ২০১৯ সালের দিকে তাঁদের পরিচয় হয়েছিল। ২০২০ সালে ‘তাঁকে ছয় মাস ধরে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে’ বললেও শ্রদ্ধা সম্পর্কচ্ছেদ করেননি আফতাবের সঙ্গে। বরং এ বছরের মে মাসে তাঁরা দিল্লিতে চলে গিয়েছিলেন এবং একটি ফ্ল্যাটে একসঙ্গেই থাকতেন।
শ্রদ্ধার মা-বাবা মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলেন, কারণ তাঁরা হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ককে অনুমোদন দিতে পারেননি। শ্রদ্ধার প্রেমিক আফতাব মুসলিম ছিলেন। মে মাসে দিল্লির মেহরাউলিতে একটি ফ্ল্যাটে চলে যাওয়ার কয়েক দিন পর এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল।