হোম > বিশ্ব > ভারত

স্কুলশিক্ষার্থীদের ক্যামেরায় উঠে এল শ্রমজীবী বাবা–মায়ের সংগ্রামী জীবন

তামাক কারখানায় কর্মরত বৃদ্ধা। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ভারতের চেন্নাইয়ের এগমোর জাদুঘরে আয়োজন করা হয় এক বিশেষ প্রদর্শনীর। ‘দ্য আনসিন পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে স্থান পায় ভারতের শ্রমজীবী মানুষের অসাধারণ কিছু ছবি। যে ছবিগুলো ক্যামেরায় ধারণ করেছে ওই শ্রমিকদের সন্তানেরাই!

তামিলনাড়ু রাজ্য সরকারের বিশেষ প্রকল্প ‘স্কুল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট’–এর আওতায় সরকারি একটি স্কুলের ৪০ জন শিক্ষার্থীকে দিয়ে তোলানো হয় ছবিগুলো। শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাবা–মা কিংবা নিজ এলাকার কোনো শ্রমজীবী মানুষের অর্থপূর্ণ ছবি তুলে আনতে বলা হয় তাদের। এই অ্যাসাইনমেন্টের আওতায় বিভিন্ন খাতের শ্রমিকদের কয়েক হাজার ছবি তোলে ওই ৪০ শিক্ষার্থী। আর সেগুলো থেকেই বাছাইকৃত ছবি প্রদর্শিত হয় চেন্নাই জাদুঘরে।

ওই শিক্ষার্থীদের একজন রাশমিথা টি। সে ছবি তুলেছে এক বৃদ্ধার। যিনি একটি তামাক কারখানায় কাজ করেন। খালি হাতে বানান ভারতের ঐতিহ্যবাহী সিগারেট ‘বিড়ি’। রাশমিথা বলে, ‘এই শ্রমিকদের কথা কেউ জানে না। তাঁরা কী ধরনের কাজ করেন, তাঁদের কত কষ্ট করতে হয়, তা কখনোই সামনে আসে না। কিন্তু খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজ। দীর্ঘ সময় তামাক কারখানায় থাকার কারণে ফুসফুসের রোগে ভোগেন তাঁরা। এত ভয়ংকর ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে হাড়ভাঙা খাটুনির বিপরীতে তাঁরা মজুরি পান খুবই সামান্য। ১ হাজারটা সিগারেটের জন্য মজুরি দেওয়া হয় ২৫০ রুপি। আমি চাই এই বিষয়গুলো সামনে আসুক।’

জয়রাজ এস নামের আরেক শিক্ষার্থী নিজের মায়ের ছবি তুলেছে, যিনি কাজ করেন ইটভাটায়। জয়রাজ বলেন, ‘আমার মা প্রায়শই বলেন, তাঁর হাতে, পায়ে, কোমরে ব্যথা। মাঝে মাঝে তো অজ্ঞানও হয়ে যান! সত্যি বলতে, মায়ের কাজের ছবি তোলার আগে কোনো দিন আমি বুঝিনি তাঁকে কতটা কঠোর পরিশ্রম করতে হয়! প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে উঠে কাজ যান তিনি।’

ইটভাটায় কাজ করছেন জয়রাজের মা। ছবি: সংগৃহীত

আরেক শিক্ষার্থী গোপিকা লক্ষ্মী ক্যামেরাবন্দী করেছে নিজের বাবাকে। অসুস্থ শরীর নিয়ে ভ্যানে করে সবজি নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন তিনি। অথচ এই শারীরিক অবস্থায় তাঁর বিশ্রামে থাকার কথা। একটা কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সপ্তাহে দু’দিন ডায়ালাইসিস করাতে হয়। কিন্তু অভাব অনটনের কারণে ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই গোপিকার বাবার। গোপিকা বলে, ‘শরীরের এমন অবস্থার পরও বাবা আমাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন। আমার চোখে তিনি একজন হিরো!’

বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবজি বিক্রি করছেন গোপিকার বাবা। ছবি: সংগৃহীত

এসব শিক্ষার্থীর সবার বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছর। তামিলনাড়ু সরকারের বিশেষ এক প্রকল্পের আওতায় ফটোগ্রাফিসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পকলা শেখানো হচ্ছে তাদের। তামিলনাড়ুভিত্তিক এনজিও নীলাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও তামিলনাড়ু স্কুল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের প্রধান মুহথামিজ কালাইভিঝি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল করে তুলতেই এমন অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। তারা নিজেদের আশপাশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনকে দেখেছে এবং বুঝতে পেরেছে কতটা পরিশ্রম ওই মানুষগুলোকে করতে হয়। আর এই বুঝতে পারাটাই সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল হয়ে ওঠার প্রথম ধাপ।’

হাদির খুনিদের দুই সাহায্যকারীকে আটকের দাবি নাকচ করল মেঘালয় পুলিশ

ধর্ষণের শিকার নারীকে বিজেপি নেত্রীর স্বামী বললেন, ‘আমার কিছুই হবে না’

বেঙ্গালুরুতে ‘বুলডোজার রাজ’: ৪০০ মুসলিম পরিবারকে উচ্ছেদ, তোপের মুখে কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিয়ে ফের উদ্বেগ জানাল ভারত

আতঙ্ক ও উত্তেজনার মধ্যে ভারতে বড়দিন ‘উদ্‌যাপন’

ওডিশায় পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম তরুণকে ‘বাংলাদেশি’ বলে পিটিয়ে হত্যা

‘বাংলাদেশি’ তকমায় এক বছরে ২২০০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারত

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

তাজমহল একসময় মন্দির ছিল—মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীর মন্তব্যে নতুন বিতর্ক

বড়দিন ঘিরে খ্রিষ্টানদের ওপর চড়াও ভারতের হিন্দুত্ববাদীরা, উত্তেজনা তুঙ্গে