১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দেশভাগের মাধ্যমে আলাদা হয়ে গেলেও বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানিরা কেন ভারতে অনুপ্রবেশ করে—সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশভাগের ৭৭তম বার্ষিকীতে উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌতে দেওয়া এক ভাষণে যোগী আদিত্যনাথ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, ‘দেশ ভাগ হয়ে গেছে ১৯৪৭ সালে। তাহলে কেন পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে এ দেশে অনুপ্রবেশ ঘটে।’
যোগী আরও বলেন, তারা যদি পাকিস্তানকে এতটাই ভালোবাসে, তাহলে তাদের উচিত ছিল মানবতার স্বার্থে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা। কিন্তু ইতিহাস থেকে তারা কোনো শিক্ষাই নেয়নি।
স্বার্থপর আকাঙ্ক্ষাই ভারতকে দেশভাগের পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। যেকোনো কিছুর ঊর্ধ্বে দেশকে রাখার পরামর্শ দিয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কিছু লোক তাদের স্বার্থপর ইচ্ছাকে জাতির ঊর্ধ্বে রেখেছিল এবং দেশকে সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।
এ সময় তিনি দেশভাগের সময় সাধারণ মানুষের অপরিসীম যন্ত্রণার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ১৯৪৭ সালের বিভাজনটি শুধু রাজনীতি কিংবা ভূমির বিভাজন নয়, বরং মানবতাকে দুটি ভাগে ভাগ করার একটি দুঃখজনক সিদ্ধান্ত ছিল। আর এর মূল্য দিতে হয়েছিল লাখ লাখ মানুষকে।
উত্তর প্রদেশ রাজ্যের সরকার ১৪ আগস্টকে দেশভাগের ভয়াবহ স্মরণ দিবস হিসেবে পালন করেছে। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে যোগী দাবি করেন, অতীত ভুলে কোনো সমাজই এগিয়ে যেতে পারেনি। তাই সমর্থকদের তিনি ব্যক্তিগত লাভ, পরিবার, বর্ণ, আদর্শ, ধর্ম, এলাকা কিংবা ভাষাকে জাতির ঊর্ধ্বে না রাখার শপথ নিতে আহ্বান জানান।
প্রতিবেশী পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সম্পর্কে যোগী মন্তব্য করেন, আলাদা হয়ে যাওয়ার সময় ভারতের সবচেয়ে উর্বর ভূমি পাঞ্জাব নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। সে সময় এই উর্বর ভূমির সাহায্যেই পাকিস্তানের অর্থনীতির চাকা সচল হয়েছিল। কিন্তু নেতিবাচকতা তাদেরকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছে যে, পাঁচ কেজির একটি ময়দার ব্যাগের জন্য সাধারণ মানুষ লড়াই করছে।
এ ছাড়া সন্ত্রাসের জন্যই পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আলাদা হয়ে গিয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন যোগী। তিনি বলেন, শিল্প এবং সাহিত্যের জন্য পরিচিতি ছিল বাংলার। আজকের বাংলাদেশ ভারতের সুতার কেন্দ্র ছিল।