কৃষক আন্দোলনে উত্তাল ভারতের হরিয়ানা রাজ্য। গত ২৮ আগস্ট পুলিশের লাঠি চার্জের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার কারনলে মহা পঞ্চায়েতের (গণসমাবেশ) ডাক দিয়েছিল সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। কিন্তু অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। সকাল থেকেই উত্তেজনা তুঙ্গে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রশাসনের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠকও ভেস্তে গেছে। বিনা অনুমতিতেই কৃষকেরা মিছিল করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। গোটা কারনলকেই মুড়ে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবা। বহিরাগতদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তারপরও জনসমুদ্রের চেহারা নেয় কারনল।
গত ২৮ আগস্ট কৃষকদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশকে লাঠি চার্জ করে আন্দোলনকারীদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন কার নলের মহকুমাশাসক আয়ুষ সিনহা। পুলিশও সেই নির্দেশ পেয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। তারপর ফের উত্তাল হয়ে ওঠে কৃষক আন্দোলন। গত রোববার উত্তর প্রদেশে গণসমাবেশ করেন কৃষকেরা। সেদিনই কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত কারনলে গণসমাবেশ করার ঘোষণা দেন। কিন্তু হরিয়ানা সরকার তাদের অনুমতি দেয়নি।
স্বরাজ ইন্ডিয়া পার্টির নেতা যোগেন্দ্র যাদব কৃষকদের পক্ষ নিয়ে বলেন, পুলিশকে লাঠি মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ কোন আইন বলে দেওয়া হয়েছে সেই ব্যাখ্যা সরকারকে দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট পুলিশের লাঠিচার্জে প্রাণ হারান কৃষক আন্দোলনে নেতা সুশীল কাজলা। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই আজ মঙ্গলবার এই গণসমাবেশের ডাক দেওয়া হয়।
কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন রাকেশ টিকায়েত। কৃষক আন্দোলনকে এরই মধ্যে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূলসহ ভারতের বিজেপিবিরোধী বিভিন্ন দল।
এদিকে বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, বিদেশি শক্তির মদতে দেশে অশান্তির সৃষ্টির জন্যই চলছে এই আন্দোলন। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে কৃষকদের এই আন্দোলন অবশ্য বিজেপি নেতাদের চিন্তায় রেখেছে। আট মাস ধরে লাগাতার আন্দোলন করে চলেছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের কৃষকেরা। তাই বিধানসভা ভোটে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে।
কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রচার করবেন তাঁরা। দেখিয়ে দেবেন কৃষকদের শক্তি।
প্রসঙ্গত, কৃষি উৎপাদিত পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে তুলে দেওয়াসহ কৃষকদের স্বার্থবিরোধী তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লিতে গত নভেম্বর থেকে চলছে ৪০টি কৃষক সংগঠনের সমবেত আন্দোলন। সেই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন জাতীয় সংসদে বিজেপি সদস্য বরুণ গান্ধীও।