যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের দাবি, ইউক্রেন রুশপন্থী সরকার গঠনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। রাশিয়া দেশটিতে সামরিক অভিযান চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ দখল করার বদলে সেখানে তাদের সপক্ষের একটি পুতুল সরকার গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে এই দাবি করে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তর। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট দপ্তর জানিয়েছে, এই পরিকল্পনায় সম্ভাব্য সরকার প্রধান হিসেবে ইউক্রেনের সাবেক এমপি ইয়েভেন মোরায়েভকে বিবেচনা করা হচ্ছে।
তবে, যুক্তারাজ্যের এই দাবি নাকচ করে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোরায়েভ নিজেকে এখনো রাশিয়ার অবরোধের শিকার ইউক্রেনের নাগরিক উল্লেখ করে বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই।’
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই বিবৃতিতে ইউক্রেনের চার সাবেক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে যে, রাশিয়ার গোয়েন্দা বিভাগ ইউক্রেনের বেশ কয়েকজন সাবেক রাজনীতিকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। তাঁদের মধ্যে ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী সেরহি আরবুজভ, ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আন্দ্রে ক্লুয়েভ, ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্টে ইয়ানুকোভিচের চিফ অব স্টাফ ভ্লাদিমির সিভকোভিচ, দেশটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ডিফেন্স কাউন্সিলের সাবেক প্রধান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিকোলা আজারভ অন্যতম।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘উল্লিখিত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার এমন কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন যারা বর্তমানে ইউক্রেন অভিযান পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত।’
ইউক্রেন অভিযান পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে রোববার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের প্রতি ‘যুদ্ধে উসকানির সঙ্গে জড়িয়ে না পড়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন। রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তাসংস্থা তাসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত এসব বিভ্রান্তিকর তথ্যই অ্যাংলো-স্যাক্সন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর হস্তক্ষেপে ইউক্রেনে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রমাণ।
ওই প্রতিবেদনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তাস আরও বলে, ‘আমরা ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতি এমন উসকানিমূলক অর্থহীন বক্তব্য না দিয়ে তাতার-মঙ্গল জাতির ইতিহাস ভালো করে পাঠ করার আহ্বান জানাই।’
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য সিএনএনের প্রতিনিধি ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরে যোগাযোগ করলে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রসচিব লিজ ট্রাস জানিয়েছেন, প্রকাশিত এসব তথ্য ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার তৎপরতাকে দিবালোকের মতো স্পষ্ট করে দিয়েছে এবং ক্রেমলিনের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর আলোকপাত করেছে।