ভ্লাদিমির পুতিনকে ক্রেমলিনের মসনদে বসার ক্ষেত্রে ভ্যালেন্তিন ইউমাশেভের অবদান কম নয়। তিনিই এবার পুতিন সরকারের উপদেষ্টা পদ ছাড়লেন। ভ্যালেন্তিন রাশিয়ার প্রয়াত নেতা বরিস ইয়েলৎসিনের জামাতা। তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি ক্রেমলিন নিশ্চিত করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্যালেন্তিন ইউমাশেভ ছিলেন অবৈতনিক উপদেষ্টা। পুতিনের সিদ্ধান্তের ওপর তাঁর প্রভাব খুব সামান্যই ছিল। তবে তাঁর প্রস্থান ইয়েলৎসিন শাসনের সঙ্গে পুতিন প্রশাসনের শেষ একটি সংযোগের বিচ্ছেদ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। বরিস ইয়েলৎসিনের হাতেই রাশিয়ার উদারনৈতিক সংস্কার এবং পশ্চিমের দিকের দ্বার উন্মোচনের যুগ শুরু হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেন পুতিন। পশ্চিমা সরকারগুলো এই অভিযানকে অযৌক্তিক, আগ্রাসন বলে অভিহিত করছে।
গত মার্চে ইয়েলৎসিন-যুগের আরেকজন জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব আনাতোলি চুবাইস ক্রেমলিনের বিশেষ দূতের দায়িত্ব ছেড়ে দেন। চলতি মাসে ইউক্রেন অভিযান নিয়ে বিরোধের জেরে জাতিসংঘে রুশ মিশনের একজন কূটনীতিক পদত্যাগ করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করছি, একমাস আগে ভ্যালেন্তিন ইউমাশেভ একজন স্বেচ্ছা উপদেষ্টা হিসেবে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরে গেছেন।’
বরিস ইয়েলৎসিন ১৯৯১ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ভ্যালেন্তিন ইউমাশেভ এক সময় ক্রেমলিনের চিফ অব স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ইয়েলৎসিনের মেয়ে তাতায়ানাকে বিয়ে করেছেন।
ভ্যালেন্তিন ইউমাশেভ ১৯৯৭ সালে প্রেসিডেন্টের প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় পুতিন কেজিবির সাবেক গুপ্তচর, এক বছর আগে ক্রেমলিনে মধ্যম মানের প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োগ পেয়েছেন। পুতিন পরে ক্রেমলিনের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে পদোন্নতি পান।
এই পদোন্নতিই পুতিনকে ইয়েলৎসিনের উত্তরাধিকারী হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার রাস্তায় তুলে দেয়। ইয়েলৎসিন পদত্যাগ করার পর ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেন পুতিন।
পুতিনের রাষ্ট্র নীতিগুলো ধীরে ধীরে ইয়েলৎসিনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে গেলেও তিনি রাশিয়ার এই সাবেক নেতার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছেন। ক্রেমলিনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পুতিন ইয়েলৎসিন কন্যা তাতায়ানাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন।
ভ্যালেন্তিন ইউমাশেভ এবং তাতায়ানার মেয়ে মারিয়া (২৪) গত ফেব্রুয়ারি তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ইউক্রেনের পতাকার একটি ছবি দিয়ে ক্যাপশনে লেখেন, ‘যুদ্ধকে না বলুন’। সঙ্গে হৃদয় ভাঙার একটি ইমোজি দেন তিনি।