কসোভোয় পুনরায় নির্বাচনের দাবি করল ফ্রান্স ও জার্মানি। গতকাল বৃহস্পতিবার মলডোভায় শুরু হওয়া ইউরোপিয়ান পলিটিক্যাল কমিউনিটির সম্মেলনে এই দাবি করেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎস এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ। এদিকে সার্বীয়দের বিক্ষোভ এখনো চলছে।
ইউরোপিয়ান পলিটিক্যাল কমিউনিটির সম্মেলনের বৈঠকের মধ্যেই জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎস এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ আলাদা হয়ে কথা বলেন। পরে দুজনই জানিয়েছেন, কসোভোর সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন। এবং তার জন্য প্রয়োজনে নতুন করে নির্বাচন করা হোক। নির্বাচনের নিয়ম আরো স্পষ্ট করা হোক। দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের কসোভো ও সার্বিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে আবেদন জানান তাঁরা।
আমেরিকাও কসোভো সমস্যা সমাধানের আর্জি জানিয়েছে। ন্যাটোর এক সম্মেলনে যোগ দিতে ইউরোপে গেছেন মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। তিনি বলেছেন, সার্বিয়া ও কসোভোকে আলোচনায় বসতে হবে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে হবে। এভাবে লড়াই চলতে দেওয়া যাবে না। এর প্রভাব আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে পড়বে।
এদিকে জার্মানি, ফ্রান্স, অ্যামেরিকা যা-ই বলুক, কসোভোর প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাবনা থেকে সরতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, নতুন করে নির্বাচনের প্রশ্ন নেই। যে মেয়রেরা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের কাজ করতে দিতে হবে। তাঁর বক্তব্য, এত বড় বড় পৌর ভবনগুলো তৈরি হয়েছে কাজের জন্য। সেই ভবনগুলোকে ঘিরে রাখার কোনো অর্থ নেই।
এদিকে বৃহস্পতিবারও উত্তর কসোভোর বিভিন্ন অঞ্চলে সড়ক আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সার্বীয়রা। পৌরসভার ভবনগুলোর সামনে সেনা মোতায়েন হলেও সার্বীয়রা বিক্ষোভ করেছেন।
কসোভোর যে অঞ্চলে বিক্ষোভ চলছে, সেটি সার্বিয়া সীমান্তের কাছে। দেশটির ৯০ শতাংশ অধিবাসী আলবেনিয়ান হলেও ওই অঞ্চল সার্বীয় অধ্যুষিত। ২০১৩ সাল থেকে ওই অঞ্চলে নিজেদের জন্য আলাদা পৌরসভা গঠনের দাবি করছে সার্বীয়রা। গত এপ্রিলে পদ্ধতিগত প্রশ্ন তুলে তাঁরা পৌরসভা নির্বাচন বয়কট করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচন হয়েছে। সার্ব অধ্যুষিত চারটি পৌরসভায় ৩-৪ শতাংশ করে ভোট পড়েছে। আর সেই ভোটে আলবেনিয়ান মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা পৌরসভায় ঢুকতে গেলে সার্বরা বাধা দেয়। সার্বদের বক্তব্য, এই নির্বাচন তাঁরা মানছেন না। এ নিয়েই তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের গোড়ায় বিক্ষোভরত সার্বীয়দের সঙ্গে ন্যাটোর বাহিনী কেফোরের তীব্র সংঘর্ষ হয়। তাতে বেশ কিছু কেফোরের জওয়ান গুরুতর আহত হন। বিক্ষোভকারীরাও আহত হয়েছেন। ন্যাটো এরপর ওই অঞ্চলে আরও ৭০০ সেনা মোতায়েন করে।