গাজায় নিহত মানবিক সহায়তাকর্মীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রিন্স উইলিয়াম। তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে মানবিক সহায়তাকর্মীদের কাজ এক অনন্য সাহসিকতার প্রতীক, যাঁরা বিপদ থেকে পালিয়ে না গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান। লন্ডনের গুনার্সবুরি পার্কে বৈশ্বিক মানবিক সহায়তাকর্মী স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
উইলিয়াম বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অমানবিক যন্ত্রণা সহ্য করছে। ইউক্রেন, সুদান, মিয়ানমার থেকে হাইতি এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে এর নজির রয়েছে। এর মাঝেই মানবিক সহায়তাকর্মীরা আশার আলো জ্বালান। এই সাহসী মানুষগুলো কষ্ট আর ক্ষুধার মাঝেও থেকে যান অন্যদের সহায়তা করতে। তাঁদের কাজ আমাদের সবার শ্রদ্ধা ও সুরক্ষার যোগ্য।’
বুধবার (১ অক্টোবর) ডেইলি মেইল জানিয়েছে, শিল্পী মাইকেল ল্যান্ডি নির্মিত ওই স্মৃতিস্তম্ভে ১৫টি মানবমূর্তি হাত ধরাধরি করে দাঁড়ানো অবস্থায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি মূর্তি একটি করে বাস্তব সহায়তাকর্মীর গল্প থেকে অনুপ্রাণিত।
ব্রিটিশ রাজপুত্র উইলিয়াম জানান, তিনি বিভিন্ন সময়ে মানবিক সহায়তাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের কঠিন বাস্তবতা উপলব্ধি করেছেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গত বছর দায়িত্ব পালনকালে ৩৮৫ জন সহায়তাকর্মী নিহত হয়েছেন আর এ বছর সংখ্যাটি ইতিমধ্যে ৩০০ ছুঁয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাতিসংঘ কর্মকর্তা টম ফ্লেচার বলেন, গাজা এখন মানবিক সহায়তাকর্মীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ স্থান। তিনি দাবি করেন, প্রতিটি হামলা মানবতার ওপর আঘাত এবং এ ধরনের অপরাধ আন্তর্জাতিক নিষ্ক্রিয়তার প্রমাণ।
ইউএনআরডব্লিউএর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক স্যাম রোজ জানিয়েছেন, গাজায় তাঁদের ৩৭০ সহকর্মী নিহত হয়েছেন, যা জাতিসংঘের ইতিহাসে একক বৃহত্তম ক্ষয়ক্ষতি। নিহত ব্যক্তিদের অনেকে শিক্ষক, চিকিৎসক, সামাজিক কর্মী বা সাধারণ মানুষ ছিলেন, যাঁরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে অন্যদের সাহায্য করছিলেন।
প্রিন্স উইলিয়াম বলেন, ‘মানবিক সহায়তাকর্মীদের আত্মত্যাগ কখনো ভোলা যাবে না। তাঁদের স্মরণে এই স্মৃতিস্তম্ভ নতুন প্রজন্মকে মানবতার মূল্য শেখাবে এবং আমাদের সবাইকে তাঁদের সুরক্ষায় আরও উদ্যোগী হতে অনুপ্রাণিত করবে।’