তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা এখনো চলছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরও বহু মানুষ চাপা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে আজ সোমবার ভোরের দিকে, তখনো মানুষের ঘুম ভাঙেনি—তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুরস্ক।
তুরস্কের সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পরই আরেকটি বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের কাহরামানমারাস প্রদেশের এলবিস্তান এলাকায়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। তবে কোনো আফটার শক ছিল না।
ইউএসজিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ভোর ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে সিরিয়া সীমান্তের কাছে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রথম ভূমিকম্পটি হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে। তখন বেশির ভাগ মানুষ ঘুমিয়ে ছিলেন। তাই হতাহতের সংখ্যা এত বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, প্রথমবারের আঘাতে শুধু তুরস্কেই দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৩০০ জনের বেশি।
অপরদিকে সিরিয়ার কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, সে দেশে ভূমিকম্পের আঘাতে ৮১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ২ হাজারের বেশি।
শত শত ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেসব ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন এবং উদ্ধারকর্মীরা।
তুরস্ক বিশ্ববাসীকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছে। বিশ্বনেতারা এই বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সহায়তায় এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে এই ভূমিকম্প এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তুরস্ক, সিরিয়া, লেবানন, সাইপ্রাস ও ইসরায়েলের লাখ লাখ বাসিন্দাও কম্পন অনুভব করেছেন।