ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শবানা মাহমুদ নতুন অভিবাসন নীতি ঘোষণা করেছেন, যেখানে অভিবাসীদের জন্য স্থায়ীভাবে দেশে থাকার নিয়ম কঠোর করা হবে। লেবার পার্টির লিভারপুল সম্মেলনে তিনি নিজেকে ‘কঠোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’ আখ্যা দিয়ে জানান—যেসব অভিবাসী ব্রিটিশ সমাজে থাকতে চান, তাঁদের উচ্চ মানের ইংরেজি শিখতে হবে, অপরাধমুক্ত থাকতে হবে, কমিউনিটিতে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে যুক্ত হতে হবে এবং চাকরির পাশাপাশি জাতীয় বিমায় অর্থ প্রদান করতে হবে। একই সঙ্গে সুবিধাভোগী না হওয়ার শর্তও রাখা হবে।
শাবানা মাহমুদ বলেন, তাঁর কিছু সিদ্ধান্ত লেবারের ভেতরেই অনেকের পছন্দ হবে না, তবে তিনি ‘ব্রিটেনের নিজস্ব ভিশনের’ জন্য লড়ছেন। ইতিপূর্বে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারও অভিবাসন নিয়ে মত দিয়েছেন। নাইজেল ফারাজের পরিকল্পনার (যেখানে স্থায়ী বসবাসের অধিকার বাতিলের কথা বলা হয়েছিল) সমালোচনা করে স্টারমার বলেছেন, বৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের বহিষ্কার করা হলে তা দেশকে ছিন্নভিন্ন করে দেবে। তিনি নাইজেল ফারাজের পরিকল্পনাকে ‘বর্ণবাদী ও অনৈতিক’ বলেও উল্লেখ করেন।
এদিকে শবানা মাহমুদের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকারের অভিবাসন পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। ব্রিটিশ রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান এনভার সলোমন বলেছেন, শর্তগুলো শরণার্থীদের অন্তর্ভুক্তি নয় বরং দেশের জন্য সমস্যা তৈরি করবে। অনেক শরণার্থী চিকিৎসক, উদ্যোক্তা হয়ে দেশে অবদান রেখেছেন। কিন্তু শুরুতে রাষ্ট্রীয় সহায়তা ছাড়া তা সম্ভব হতো না।
প্র্যাক্সিসের প্রধান মিনিই রহমান বলেন, এই নীতি সমাজে দুই শ্রেণি তৈরি করবে এবং স্বেচ্ছাসেবাকে বাধ্যতামূলক করা বৈষম্য বাড়াবে।
এদিকে ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, এ বিষয়ে শিগগিরই পরামর্শ প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিশেষ করে যেসব অভিবাসী অতীতে ভাতা নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। সম্ভাবনা আছে হয়তো সরাসরি অযোগ্য ঘোষণা করা হবে বা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে।
বর্তমানে পাঁচ বছর পর অভিবাসীরা স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে পারেন। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে এই সময়সীমা ১০ বছরে বাড়ানো হবে। শাবানা মাহমুদ তাঁর ভাষণে দেশপ্রেমকে ইতিবাচক শক্তি হিসেবে ধরে রাখার কথা বলেছেন এবং সীমান্ত নিরাপত্তা ও ন্যায়সংগত অভিবাসনকে সহনশীল ব্রিটেনের জন্য অপরিহার্য হিসেবে তুলে ধরেছেন।
আরও খবর পড়ুন: