হোম > বিশ্ব > এশিয়া

বিশ্বজুড়ে হালাল ফুডের সফল ব্যবসা, গোপনে শত শত শিশুকে নিপীড়ন!

ছবি: সিএনএন

মালয়েশিয়ার ‘গ্লোবাল ইখওয়ান সার্ভিসেস অ্যান্ড বিজনেস হোল্ডিংস’ (জিআইএসবিএইচ) বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ ব্যবসা পরিচালনা করে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা গোপনে শত শত শিশুকে নিপীড়ন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মালয়েশিয়ার পুলিশের বরাত দিয়ে সোমবার সিএনএন জানিয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানটি একটি ধর্মীয় কাল্টের মতো পরিচালিত হতো। এই কাল্টের অনুসারী নারী ও পুরুষদের বাধ্যতামূলক শ্রম দিতে হতো। এমনকি অনেক নারী শ্রমিককে সেখানে সন্তানও জন্ম দিতে হতো।

গত সেপ্টেম্বরে জিআইএসবিএইচ পরিচালিত ২৪টি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ছয় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে উদ্ধার করে মালয়েশিয়ার পুলিশ। সে সময় এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয় এবং তাঁদের বিরুদ্ধে শিশু পাচার, যৌন নিপীড়ন ও সংঘবদ্ধ অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। বর্তমানে তাঁরা আইনি লড়াই করছেন।

উদ্ধার হওয়াদের অনেকেই জানিয়েছেন, বাইরের জগতের সঙ্গে তাঁদের কোনো সংযোগ ছিল না। মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল এবং শুধুমাত্র জিআইএসবিএইচ পরিচালিত টিভি চ্যানেল ‘ইখওয়ান টিভি’র খবর দেখা যেতো। এই চ্যানেলে প্রচার করা হতো নিষিদ্ধ ঘোষিত ইসলামিক কাল্ট ‘আল-আরকাম’-এর শিক্ষা।

অভিযোগ রয়েছে, সংগঠনের নেতারা অনুসারীদের সন্তানদের এতিমখানায় পাঠিয়ে দান সংগ্রহ করতেন এবং এই অর্থে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। কিছু শিশুকেও যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ৩৯২ শিশুর শারীরিক পরীক্ষায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জিআইএসবিএইচ-এর প্রধান নির্বাহী নাসিরুদ্দিন মোহাম্মদ আলী স্বীকার করেছেন, দু-একটি যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। তবে তিনি অন্যান্য অভিযোগকে ‘অপবাদ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সংগঠনের প্রধানদের মধ্যে রয়েছেন আল-আরকামের প্রয়াত নেতা আশআরি মুহাম্মদের পুত্র মোহাম্মদ আদিব আত-তারমিমি।

সাবেক কর্মীরা জানিয়েছেন, পুরুষ ও নারীদের আলাদা রাখা হতো এবং এদের মধ্যে বিবাহিত দম্পতিরা শুধু অনুমতি নিয়ে দেখা করতে পারতেন। এমনকি বিবাহিত জীবনের পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়ে সংগঠনের নেতাদের কাছ থেকে নির্দেশনা নিতে হতো।

উদ্ধার হওয়া শিশুরা জানিয়েছে, প্রতিদিন তাদের ইসলামিক শিক্ষা এবং সংগঠনের নেতাদের প্রতি আনুগত্য শেখানো হতো। তাদের শেখানো হতো, ‘তোমার মা-বাবা কিছুই না, শুধু নাসিরুদ্দিনই তোমার নেতা।’ কিছু শিশু নিজের আসল বাবা-মাকে চিনতেই পারত না।

গ্রেপ্তারের পর গত বছরের অক্টোবরে জিআইএসবিএইচ-এর প্রধান নির্বাহী নাসিরুদ্দিন মোহাম্মদ আলী। ছবি: এএফপি

জিআইএসবিএইচ-এর ব্যবসা অন্তত ২০টি দেশে বিস্তৃত। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সৌদি আরব অন্যতম। রেস্তোরাঁ ছাড়াও সুপারমার্কেট, লন্ড্রি এবং বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনেও তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

উদ্ধার হওয়া কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, জিআইএসবিএইচ নেতাদের লালা, চুল ও গোসলের পানি মিশিয়ে ‘পবিত্র পানি’ তৈরি করা হতো এবং তা খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হতো।

এই ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সংগঠনটির বিরুদ্ধে মামলা চলছে এবং অধিকাংশ অভিযুক্ত বর্তমানে বিচার প্রক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

এই কেলেঙ্কারির ফলে গোটা মালয়েশিয়া স্তম্ভিত। এই কাল্টের আসল চেহারা প্রকাশিত হওয়ার পর নিপীড়িত শিশু ও সাবেক কর্মীদের নতুন জীবনে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু অনেকেই এখনো অন্ধবিশ্বাসের কারণে এই সংগঠনকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে উদ্ধারকৃত শিশুরা পুনর্বাসনের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। তবে দীর্ঘদিনের মগজধোলাই ও মানসিক নির্যাতনের কারণে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সহজ হবে না বলেই মনে করছেন দায়িত্বশীলেরা।

অস্ট্রেলিয়ায় তরুণীকে হত্যার পর ৪ বছর ভারতে লুকিয়ে ছিলেন ঘাতক

৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের পর জাপানে সুনামি সতর্কতা

ভয়াবহ সংঘাতের পর কম্বোডিয়া সীমান্তে থাইল্যান্ডের বিমান হামলা

চীনের বিরুদ্ধে জাপানের গুরুতর নিরাপত্তা অভিযোগ

চীনের বিরুদ্ধে এককাট্টা জাপান ও অস্ট্রেলিয়া

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

আদালতে শিনজো আবের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইলেন হত্যায় অভিযুক্ত

অস্ট্রেলিয়ায় ‘এশিয়ান এল চ্যাপোকে’ ১৬ বছরের কারাদণ্ড

দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিন প্রকল্প: এশিয়ায় উসকে দেবে সমুদ্রতলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা

৮০ হাজার মানুষের সামনে শিশুকে দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করাল তালেবান, জাতিসংঘের নিন্দা