হোম > বিশ্ব > এশিয়া

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রেসিডেন্ট মারা গেছেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

মাইয়েন্ত সোয়ে। ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রেসিডেন্ট উ মাইয়েন্ত সোয়ে মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির রাজধানী নেপিডোর একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জান্তা সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘প্রেসিডেন্ট উ মাইয়েন্ত সোয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ২৮ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।’ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে বলা হয়েছে, তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।

মাইয়েন্ত সোয়ে ছিলেন মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সাবেক এই জেনারেল জান্তাবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় ২০২১ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট হন। ওই বছরই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। তখন থেকে মাইয়েন্ত সোয়ে ছিলেন দেশের প্রেসিডেন্ট, যদিও মূল ক্ষমতা ছিল সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে।

সেনা অভ্যুত্থানের আগেও মাইয়েন্ত সোয়ে মিয়ানমারের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একজন মুখ ছিলেন। অং সান সু চির নেতৃত্বে আধা-গণতান্ত্রিক সরকারের সময় তিনি ছিলেন প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট)। সেনাবাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসনের মধ্যকার একটি ভারসাম্য রক্ষার ভূমিকা পালন করতেন তিনি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী যখন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা নেয়, তখন প্রেসিডেন্ট হন মাইয়েন্ত সোয়ে। তবে তিনি ছিলেন কেবল আনুষ্ঠানিক প্রেসিডেন্ট—নির্বাহী ক্ষমতা ছিল পুরোপুরি সেনাবাহিনীপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে।

গত বছর হঠাৎ করেই প্রেসিডেন্ট সোয়ে মেডিকেল লিভে যান। তখন থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। সরকারি তথ্যে বলা হয়েছে, তিনি পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুর আগে তাঁর ওজন দ্রুত কমে যাচ্ছিল, ক্ষুধামান্দ্য ও জ্বর ছিল, পাশাপাশি দেখা দিচ্ছিল মানসিক দুর্বলতা ও স্মৃতিভ্রংশের লক্ষণ। অবশেষে তাঁকে নেপিডোর একটি সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাইয়েন্ত সোয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে ঠিক কখন, কোথায় বা কীভাবে সেই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে—তা বিস্তারিত জানানো হয়নি।

মাইয়েন্ত সোয়ের মৃত্যু এমন এক সময়ে এল, যখন মিয়ানমার রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটে জর্জরিত। মাত্র এক সপ্তাহ আগেই সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

মিন অং হ্লাইং বলেন, চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যেই ডিসেম্বরে দেশব্যাপী নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর আগেই সামরিক সরকার একটি বেসামরিক অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথাও জানায়। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই ‘ক্ষমতা হস্তান্তর’ ছিল কেবল কাগজে-কলমে। বাস্তবিক অর্থে দেশটির সকল ক্ষমতা এখনো মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে।

দেশটির সামরিক সরকার বলছে, এই নির্বাচন হবে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। তবে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী ও সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীগুলো জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই নির্বাচন বর্জন করবে। তাদের মতে, এই ভোট একটি প্রহসন, যার মাধ্যমে সামরিক সরকার আন্তর্জাতিকভাবে বৈধতা পাওয়ার চেষ্টা করছে।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমার কার্যত একটি গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। প্রথমে শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ শুরু হলেও, তা দমন করতে গিয়ে সেনাবাহিনী সহিংস পথে যায়। এরপর আন্দোলনকারীদের পাশে এসে দাঁড়ায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

ফলে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। সামরিক বাহিনী বহু এলাকা হারিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার তথ্যমতে, ২০২৪ সাল নাগাদ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দেশের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ এলাকা। যদিও এই এলাকাগুলোর মধ্যেই রয়েছে প্রধান শহর, রেলপথ, বিমানবন্দর ও প্রশাসনিক দপ্তর।

৮০ হাজার মানুষের সামনে শিশুকে দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করাল তালেবান, জাতিসংঘের নিন্দা

মিয়ানমারে আফিম চাষ বেড়েছে বহুগুণ, সংঘাত ও দারিদ্র্যে চোরাচালানে জড়াচ্ছেন কৃষকেরা

এশিয়ার চার দেশে বন্যা-ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা ১১০০ ছাড়াল

এশিয়াজুড়ে বন্যা–ভূমিধসের তাণ্ডব, মৃতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়াল

প্রথমবারের মতো কাঠমান্ডুতে মৎস্য মেলার আয়োজন করল বাংলাদেশ

বন্যায় বিপর্যস্ত দক্ষিণ এশিয়া, চার দেশে ৬০০ জনের প্রাণহানি

ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়াল

বিদেশে থাকা নাগরিকেরা ফিরতে চাইলে স্বাগত জানানো হবে: মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান

ঘূর্ণিঝড়ে শ্রীলঙ্কায় মৃত বেড়ে ১৫৩, আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রার্থনা

থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা, ভ্রমণের আগে পর্যটকদের যা জানা দরকার