সাধারণত ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াকে হত্যা করতে বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে কিছু ব্যাকটেরিয়া বিবর্তিত হয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এগুলোকে আর মেরে ফেলতে পারে না পুরোনো অ্যান্টিবায়োটিক। এ ধরনের ব্যাকটেরিয়াকে ‘সুপারবাগ’ বলা হয়।
অ্যান্টিবায়োটিক-সহিষ্ণু এসব সুপারবাগের সংক্রমণে বছরে বিশ্বের প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। ফলে সুপারবাগকে থামাতে শক্তিশালী ও নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন দেখা দেয়। এসব কারণে গবেষকেরা সমাধান নিয়ে দিনরাত গবেষণা চালিয়ে যান। সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহযোগিতা নিয়ে একটি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। এটি মারাত্মক প্রজাতির একটি সুপারবাগকে (Acinetobacter baumannii) মেরে ফেলতে সক্ষম।
কয়েক হাজার রাসায়নিক থেকে কার্যকর উপাদানগুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকা করতে বিজ্ঞানীরা এআইয়ের সহযোগিতা নিয়েছিলেন। কার্যকারিতা অজানা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী এমন ৬ হাজার ৬৮০টি উপাদানের তালিকা প্রকাশ করেছে এআই। ফলাফলটি নেচার কেমিক্যাল বায়োলজিতে প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যেই ছোট একটি তালিকা করে দেয় এআই।
গবেষকেরা তালিকার ২৪০টিই গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সম্ভাব্য ৯টির তালিকা করেন। পরে এগুলোর মধ্য থেকে ‘অ্যাবাউসিন’ নামের একটি পরীক্ষামূলক শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করা হয়, যা পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক তিনটি সুপারবাগের একটিকে মেরে ফেলতে সক্ষম।
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা বলছেন, নতুন ওষুধের আবিষ্কারকে ব্যাপকভাবে ত্বরান্বিত করার ক্ষমতা রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। এটি বিজ্ঞান ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি বিপ্লবী শক্তি হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে তিনটি সুপারবাগকে ‘মারাত্মক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে, এর মধ্যে এটি অন্যতম। সুপারবাগটি ক্ষতস্থানকে সংক্রামিত করতে পারে এবং এর কারণে নিউমোনিয়াও হতে পারে। এটি হাসপাতালের মেঝে এবং চিকিৎসা সরঞ্জামেও বেঁচে থাকতে পারে। খবর বিবিসির।