রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক শিথিল করবেন না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হেসেট। মার্কিন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের পরিচালক হেসেট গতকাল বুধবার বলেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা খুবই ‘জটিল’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর কারণ নয়াদিল্লি মার্কিন পণ্যের জন্য বাজার খুলতে অনাগ্রহী।
হেসেট বলেন, ‘যদি ভারতীয়রা নড়চড় না করে অর্থাৎ আলোচনায় আগ্রহী না হয়, আমি মনে করি না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা করবেন।’
প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে, যা ব্রাজিল ছাড়া অন্য কোনো দেশের জন্য সর্বোচ্চ। এর মধ্যে ভারতের রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল কেনার কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক যুক্ত হয়েছে।
হেসেট জানান, এ বাণিজ্য আলোচনার একটি অংশ রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল, যাতে মস্কোকে শান্তি চুক্তির পথে আনা যায়। তবে ভারতের অনমনীয় অবস্থান মার্কিন প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে। আলোচনাকে ম্যারাথনের সঙ্গে তুলনা করে হেসেট বলেন, ‘বাণিজ্য আলোচনার ক্ষেত্রে একটি বড় শিক্ষা হলো—আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদে ভাবতে হবে। মেনে নিতে হবে উত্থান-পতন থাকবে, তারপরই আমরা চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছাতে পারব।’
হেসেটের মন্তব্যের প্রতিধ্বনি শোনা যায় মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের বক্তব্যেও। তিনি বলেছেন, ভারতের ওপর উচ্চ শুল্ক কেবল রাশিয়ান তেল আমদানির কারণে নয়, বরং দীর্ঘায়িত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার জন্যও।
ফক্স বিজনেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, মে বা জুনের মধ্যে একটি চুক্তি হবে। আমি ভেবেছিলাম শুরুর দিকের চুক্তিগুলোর মধ্যে একটি ভারতের সঙ্গে হবে। এটি হয়নি, উল্টো তারা আলোচনার ক্ষেত্রে আমাদের বেশ দীর্ঘ সময় ধরে রেখেছে। অন্যদিকে রুশ অপরিশোধিত তেল কেনাও চালিয়ে গেছে।’
বেসেন্ট আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র আর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। দিনশেষে আমরা একত্রিত হব।’
এদিকে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে অনড় থাকার প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি শপথ নিয়ে বলেছেন, তিনি দেশের কৃষকদের স্বার্থে কখনো আপস করবেন না।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, নতুন শুল্ক ভারতের ৪৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। প্রাথমিকভাবে ক্ষতি সীমিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, এ শুল্ক দীর্ঘ মেয়াদে কর্মসংস্থান, শিল্প ও প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি