সিলেটের গোয়াইনঘাটে জনতা দুই শিশু অপহরণকারী সন্দেহে নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী রিয়াজ বাহিনীর প্রধান রিয়াজুল ইসলাম ওরফে ‘শুটার রিয়াজ’-কে আটক করেছে। আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গোয়াইনঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলীরগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং তাঁর ব্যবহৃত গাড়িটিও জব্দ করা হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, র্যাব সদস্যরা সন্ত্রাসী রিয়াজুল ইসলামের অবস্থান জানার পর থেকে তাঁকে খুঁজছিলেন। আজ একটি গাড়িতে করে তিনি তাঁর দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে গোয়াইনঘাটের আলীরগ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি দ্রুত আলীরগ্রামের একটি বাড়ির বারান্দায় দুই শিশুকে রেখে পালানোর চেষ্টা করেন।
দুই শিশুকে এভাবে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় গ্রামবাসীর সন্দেহ হয়। তাঁরা শিশু অপহরণকারী সন্দেহে ধাওয়া করে রিয়াজুলকে আটক করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা তাঁকে মারধরও করেন। খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রিয়াজুল ও তাঁর দুই শিশুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর আসল পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়—তিনিই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী শুটার রিয়াজ।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সুমন জানান, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে উত্তেজিত গ্রামবাসীকে শান্ত করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিল, এটি একটি ভুল-বোঝাবুঝি। কিন্তু থানায় যাওয়ার পর চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। শুনেছি, র্যাব তাঁকে ধাওয়া করছিল। র্যাবের হাত থেকে বাঁচতে তিনি দুই শিশুকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তাঁকে আটক করেন।’
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, আটক ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হচ্ছে এবং পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, রিয়াজের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। হত্যা, খুনসহ তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ২০টি মামলা আছে। এর আগে ২০২২ সালে র্যাব-৩-এর সদস্যরা তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। সে সময় তাঁর কাছ থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন, ১২ রাউন্ড গুলি, পাঁচটি ধারালো দেশীয় অস্ত্র, একটি মোটরসাইকেল ও ৬০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছিল।