সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরে শুরু হয়েছে পাথর লুটপাট। বুধবার সকালেও দেখা গেছে কয়েক শ বারকি নৌকায় করে চলেছে পাথর উত্তোলন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই অনন্য স্থান।
স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে এলাকা থেকে পাথর লুটপাট চললেও এবার লুটপাটকারীদের নজর পড়েছে সাদা পাথরের ওপর। গত মঙ্গলবার রাতে মৌসুমের প্রথম পাহাড়ি ঢল নামার পর থেকেই লুটপাট শুরু হয়।
বুধবার সকাল থেকে শত শত নৌকায় করে লুট করা হচ্ছে পাথর। এসব নৌকা থেকে চাঁদা আদায় করছেন কালাইরাগ, কালাবাড়ী ও উত্তর রাজনগরের কয়েক যুবক। তাঁরা প্রতিটি নৌকা থেকে ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কলাবাড়ী গ্রামের কয়েকজন নৌকাচালককে মারধর করা হয়। এতে বদরুল নামে এক চালক গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তিনি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রকৃতি ও পর্যটনকেন্দ্র রক্ষায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাঁরা বলছেন, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় এই লুটপাট দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ শাহেদা আখতার বলেন, ‘প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পাথরকোয়ারি বন্ধ থাকার পরও যেভাবে উত্তোলন হচ্ছে, তা বন্ধ না করে বরং আবার ইজারার চিন্তা করা হচ্ছে। এতে পরিবেশ ও পর্যটন মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে।’
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে বিজিবি থেকে বিকেলে জানানো হয়েছে। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’
সিলেট ব্যাটালিয়নের (৪৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথর থেকে পাথর লুটপাটের খবর পেয়ে আমি স্থানীয় বিজিবি সদস্যদের ব্যবস্থা নিতে বলেছি। সাদা পাথর জাতীয় সম্পদ, এটা কোনোভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে, সিলেটের জেলা প্রশাসকের মন্তব্য পেতে একাধিকবার চেষ্টা করেও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।