মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিয়ের সপ্তাহ না পেরোতেই মো. মছব্বির হোসেন (২২) নামের ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ এক যুবক কবিরাজের বাড়িতে ‘বিষপানে’ মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। মছব্বির উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মছব্বির হোসেন ছোটবেলা থেকেই কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ‘পাগলামি’ বাড়তে থাকে। তবে দুই বছর থেকে সে সুস্থ হয়ে কাজ করে সংসার চালাত। গত বছর মছব্বিরের মা মারা যান। এক সপ্তাহ আগে মছব্বিরকে বিয়ে দেয় পরিবার। কিন্তু বিয়ের দুই দিন পর তিনি আবারও ‘পাগলামি’ শুরু করেন। তাঁর পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কবিরাজের কাছে মছব্বিরকে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হন মছব্বির।
ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মছব্বিরের ‘পাগলামি’ বেড়ে যায়। আবারও কবিরাজ দেখানোর উদ্দেশ্যে তাঁর ছোট ভাই মোতাচ্ছির বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে মৌলভীবাজার নিয়ে যায়। কবিরাজ নামাজে গেলে কবিরাজের বাড়িতেই এক ফাঁকে তিনি বিষপান করেন। বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাঁকে সিলেটে স্থানান্তর করেন। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মছব্বিরকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সালেহ আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মছব্বির মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। মাঝখানে কয়েক বছর ভালো ছিল। কিছুদিন আগে সে আবার মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। পরিবারের সদস্যরা বলেন ‘‘জিনে আছর’’ করেছে।’
নিহতের বাবা শফিক মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ছেলের ছোটবেলা থেকে মানসিক সমস্যা ছিল। বিয়ের পর সেই আগের সমস্যা আবার শুরু হয়।’
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী বিষপানে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শুনেছি ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।’