শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় নলকূপ খনন করতে গিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। উপজেলার রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়নের গাছগড়া গ্রামের হোটেলশ্রমিক নূর মোহাম্মদের বাড়িতে গভীর নলকূপের জন্য খনন করতে গিয়ে এই গ্যাসের সন্ধান মিলে। আর সেই গ্যাস দিয়েই নূর মোহাম্মদের পরিবারসহ আশপাশের কয়েকটি পরিবার ১১ দিন ধরে রান্নাবান্না করছে।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হোটেলশ্রমিক নূর মোহাম্মদের বাড়িতে ১৪ অক্টোবর সকালে মিস্ত্রিরা দেড় ইঞ্চি পাইপ দিয়ে প্রায় ৫৫ ফুট গভীরে মাটি খনন শুরু করেন। কিছু সময় পর পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হতে শুরু করে। পরে আরও দুটি স্থানে ৪০ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করলেও একইভাবে গ্যাস পাওয়া যায়। দুটি খনন বন্ধ করে দেওয়া হলেও একটি স্থান দিয়ে অনবরত গ্যাস বের হতে থাকে।
আজ শনিবার সকালে গাছগড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অনেক মানুষ জটলা করে আছেন নূর মোহাম্মদের বাড়িতে। কেউ কেউ রান্না করে চলে গেছেন। এক ব্যক্তি ভাত রান্না করার জন্য হাঁড়ি বসিয়েছেন। স্থানীয় যুবক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা সরকারের সম্পদ। পাশের জামালপুর জেলায় গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের খবর এসেছে। এখানেও অনুসন্ধান করলে গ্যাসক্ষেত্রের সম্ভাবনা থাকতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।’
গৃহিণী শারমিন আক্তার (২৮) বলেন, ‘প্রায় ১০ দিন ধরে এই গ্যাস দিয়েই আমরা রান্না করতেছি। আশপাশের মহিলারাও এখানেই রান্না করছে। তবে কিছুটা ভয়ও লাগে। আমরা চাই দ্রুত যেন এই বিষয়ে একটা ব্যবস্থা হয়।’
বাড়ির মালিক নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘গ্যাস তো ঝুঁকিপূর্ণ জিনিস। নিচে কতটা গ্যাস আছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা হলে বিপদ হতে পারে। সরকার বিষয়টি দেখলে ভালো হতো।’
রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হযরত বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পাই এবং উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তবে আমরা কিছুটা আতঙ্কে আছি। কারণ, কখন কী ঘটে বলা যায় না।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। আজ বিকেলে বাপেক্স এবং আগামীকাল তিতাস গ্যাসের প্রতিনিধিদল পরিদর্শনে আসবে।’