হোম > সারা দেশ > রংপুর

সীমান্ত দিয়ে মানুষ ঠেলছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা

কুড়িগ্রাম, পানছড়ি ও রামগড় প্রতিনিধি

খাগড়াছড়ির তিন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয়দের বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে পুশ ইন করা হয়। তাদের বেশির ভাগকেই আটক করা হয়েছে। গতকাল পানছড়িতে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যেই বাংলাদেশের চার সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পুশ ইন করেছে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির তিনটি সীমান্ত দিয়ে গতকাল বুধবার পুশ ইন করা হয় ৮১ জনকে। আর কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্ত দিয়ে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢোকানো হয় ৩০ জনকে।

এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকায় পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

খাগড়াছড়ির স্থানীয় ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্র বলেছে, এই জেলার তিন উপজেলার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে ৮১ জনকে পুশ ইন করেছে বিএসএফ। গতকাল ভোরে মাটিরাঙ্গা, রামগড় ও পানছড়ি উপজেলার সীমান্তে এসব ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মাটিরাঙ্গার গোমতীর শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন, আচালং এলাকায় ২৩ জন, পানছড়ির লোগাং দিয়ে ৩০ জন এবং রামগড় সীমান্ত দিয়ে একজনকে পুশ ইন করা হয়। পুশ ইন করা ব্যক্তির সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের। যে ৮১ জনকে আটক করা হয়েছে, তাদের সবাই ভারতের গুজরাটের মুসলিম সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ ও শিশু।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানান, তাঁরা ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা। বাংলা ভাষাভাষী হলেও তাঁদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ভারতে। তাঁদের দাবি, বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের গুজরাট থেকে উড়োজাহাজে করে ত্রিপুরায় নেন। এরপর মাটিরাঙ্গার খেদাছড়া ও যামিনীপাড়া এবং পানছড়ির সীমান্তবর্তী রুপসেনপাড়া এলাকা দিয়ে তাঁদের পুশ ইন করে।

জানতে চাইলে স্থানীয় ১ নম্বর লোগাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা বলেন, ‘ভারতীয়দের বাংলাদেশের সীমান্তের ভেতরে অবৈধ অনুপ্রবেশ বিষয়ে শুনেছি। দুর্গম সীমান্ত এলাকা হওয়ায় সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে বিজিবির পাশাপাশি আমরাও সতর্ক আছি।’

সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের বরাতে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গুজরাট থেকে দুটি উড়োজাহাজে করে আনুমানিক ৪৫০ জনকে ত্রিপুরা রাজ্যে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের পর্যায়ক্রমে পুশ ইন করা হবে। ১১৪ বিএসএফ এলকেপাড়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা ভোরে ত্রিপুরার আগরতলার উদয়পুর জেলার রইস্যাবাড়ী ও নতুন বাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের গহিন অরণ্য এলাকা দিয়ে তাঁদের পুশ ইনের চেষ্টা করেছেন। এর আগে চোখ বেঁধে প্রায় এক ঘণ্টা হাঁটিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে আনে বিএসএফ।

পানছড়ি ব্যাটালিয়ন ৩ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্র বলেছে, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সতর্ক আছেন বিজিবি সদস্যরা। তবে পুশ ইনের বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রামগড় ৪৩ বিজিবির সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, রামগড় সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করা একজনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৭২ জন ভারতীয় নাগরিকের অবৈধভাবে পুশ ইন হওয়ার খবর পেয়েছি। বিজিবি বিষয়টি খুব সতর্কতার সঙ্গে দেখছে বিষয়টি।’

কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ঢোকানো হলো ৩০ জনকে

কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্ত দিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে ৩০ জনকে বাংলাদেশে ঢোকানোর খবর পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে ২১ জন রোহিঙ্গা। বাকি ৯ জন দাবি করেছেন, তাঁরা বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশে ঢোকানোর পর ওই ৩০ জনকেই আটক করা হয়েছে বলে গতকাল দুপুরে জানিয়েছেন জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের রৌমারী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার সোহেল রানা।

বিজিবি ও সীমান্তের স্থানীয় সূত্র বলেছে, ভারতের আসাম রাজ্যের দক্ষিণ সালমারা মানকারচর জেলার শাহপাড়া বিএসএফ সদস্যরা মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে ওই ৩০ জনকে বাংলাদেশে ঢোকায়। তাঁদের মধ্যে বিজিবির টহল দল ২৭ জনকে আটক করেছে। উপজেলার কর্তিমারী এলাকা থেকে রৌমারী থানার পুলিশ আটক করেছে ৩ জনকে।

আটক ব্যক্তিদের বরাতে বিজিবির একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে, আটক ব্যক্তিরা ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটি লকড়া সেন্ট্রাল কারাগারে ছিল। পরে তাদের আসামের গোয়ালপাড়া মাটিয়াল ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক রেখে সব তথ্যপ্রমাণ কেড়ে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দক্ষিণ শালমারা মাইনকারচর শাহপাড়া দিয়ে তাদের বাংলাদেশে ঢোকানো হয়।

জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসানুর রহমান বলেন, ‘আমরা আটক ব্যক্তিদের পরিচয় ও অন্যান্য তথ্য যাচাই-বাছাই করছি। পরে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।’

সীমান্ত এলাকার এসপিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা জানান, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। গতকাল বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক শুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ-২০২৪-এর চূড়ান্ত পর্বের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। পরে সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর।

আইজিপি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্তবর্তী জেলা ৩০টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপারদের আগেই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব যেন আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।’

সমাবেশ থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল কর্মীর

‘১০ লাখ দিলেই তুমি সভাপতি’ বেরোবি ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে অভিযোগ

‘সেবা বন্ধ থুইয়া মানুষোক জিম্মি করি আন্দোলন করেছে, গরিব মানুষ কোনঠে যাইবে’

স্থগিতাদেশ তুলে ব্রাকসুর নতুন রোডম্যাপ প্রকাশ

একটি শ্রেণি সংস্কার ছাড়াই ক্ষমতায় যেতে ‘ডাবল পাগল’ হয়ে গেছে: রেজাউল করীম

বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার যাত্রী নিহত

পাঁচ দফা দাবিতে রংপুরে সমমনা ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশ আজ, দলে দলে আসছেন নেতা-কর্মীরা

শ্বশুর-জামাইকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িতের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

নীলফামারীতে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড