বগুড়ায় অনলাইনে আবেদন করে ভর্তির সুযোগ না পাওয়া ২৫ শিক্ষার্থীকে অফলাইনে (সরাসরি) ভর্তি করার কথা বলে টাকা নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে এবার ওই শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।
এ ঘটনায় র্যাব ও পুলিশের পৃথক অভিযানে বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজের তিন কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিরা হলেন আমিনুর ইসলাম, হারুনর রশিদ ও কাওছার হোসেন। এ ছাড়া রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থীরা জানান, বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে অফলাইনে (সরাসরি) ভর্তি করানোর কথা বলেন টাকা নেন কলেজের কর্মচারী হারুন মিয়া, আব্দুল হান্নান ও তাঁদের সহযোগীরা। ভর্তির টাকা জমা নিতে কলেজ প্যাডে তাঁদের দেওয়া হয় ভর্তির রসিদও। এই দুই বছরে কলেজের নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেন তাঁরা। পরে এইচএসসির ফরম পূরণসহ বিভিন্ন ফির নামে তাঁদের কাছ থেকে আদায় করা হয় অন্তত ৫০ হাজার টাকা করে।
কিন্তু পরীক্ষার আগে আর প্রবেশপত্র পাননি ওই ২৫ পরীক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে তাঁরা জানতে পারেন, ভর্তি প্রক্রিয়াটাই ছিল ভুয়া।
এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে কলেজ প্রশাসন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কলেজের ভূগোল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল জলিলকে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে জানান কলেজের উপাধ্যক্ষ রেজাউন নবী।
এ ছাড়া রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধিদল আজ শনিবার শাহ সুলতান কলেজে যান। এর পরপরই র্যাব ও পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ওই তিন কর্মচারীকে আটক করে।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিব হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল কলেজ পরিদর্শন শেষে বলেন, এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাক না কেন (কলেজ বা শিক্ষা বোর্ডে কর্মরত) তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে তিনিসহ চারজন ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন। ২১ আগস্টের মধ্যে তাঁরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানান।
সরকারি শাহ সুলতান কলেজের উপাধ্যক্ষ রেজাউন নবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, র্যাব ও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন কর্মচারীকে নিয়ে গেছেন। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, সেটি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা। এ ছাড়া কলেজ ও শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত কমিটিও বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান তিনি।