পাঁচ বছর আগে জন্মের সময়ই নাম রাখা হয়েছিল ‘কালু মাস্তান’। নামের মতোই দেহের গঠন, চোখেমুখে জৌলুস আর চলাফেরায় এক ধরনের নেতৃত্বের ছাপ। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কাজিপুরা গ্রামে খামারি আব্দুল বারিক ভূঁইয়ার আদর-যত্নে বেড়ে উঠেছে এই ফ্রিজিয়ান জাতের ৩০ মণ ওজনের বিশাল ষাঁড়টি।
গত বছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির হাটে তোলা হয়েছিল কালুকে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বাড়িতেই ফেরত আনতে হয়। এবার আবারও ঈদকে সামনে রেখে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে কালুকে। দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। তবে এখনো মেলেনি কাঙ্ক্ষিত কোনো ক্রেতা।
চোখের কোণে পানি চেপে বারিক ভূঁইয়া বলেন, "এই ক’টা বছর সন্তানের মতো করে বড় করেছি কালুকে। ভালো দাম না পেলে কষ্টটা সামাল দেওয়া কঠিন হবে। "
তিনি দাবি করেন, আশপাশের গ্রামগুলোতে এমন আকৃতি ও গড়নের ষাঁড় আর নেই। তার ভাষায়, "কালু শুধু একটা গরু না, সে আমার জীবনের একটা অধ্যায়। "
বারিক ভূঁইয়ার প্রত্যাশা, কোনো হৃদয়বান শিল্পপতি বা সচেতন মানুষ কালুকে কিনে তার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবেন। "সে আমার সন্তানের মতো। বিক্রি করলেও চাই যেন ভালো থাকে। "
খামারে কালুর পাশাপাশি রয়েছে আরও একটি ষাঁড়—‘বাহাদুর’। বয়স ৪ বছর, ওজন প্রায় ২০–২২ মণ। এই ষাঁড়টির দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ছয় লাখ টাকা।
বারিক ভূঁইয়া বলেন, “প্রতিদিন খৈল, ভূষি, ভুট্টা—এসব খরচ মিলিয়ে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হয়। এখন সেটা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ”
তবুও বুক ভরে আশায় আছেন তিনি—হয়তো কোনো এক শুভক্ষণে কোনো শুভক্রেতা নজর দেবেন তার ‘কালু মাস্তান’-এর দিকে।