নওগাঁর বাজারে সব ধরনের মুরগির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। অথচ উত্তরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মুরগি উৎপাদনকারী এলাকার মধ্যে একটি হলো নওগাঁ জেলা। ১০ দিনের ব্যবধানে এই জেলায় মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা অস্বস্তিতে পড়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার নওগাঁ পৌর মুরগি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি দরে। আগে এই দাম ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮৫ থেকে ২৯০ টাকা দরে, যা আগে ছিল ২৫০ থেকে ২৬০ টাকার মধ্যে। লেয়ার মুরগি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এর আগের দাম ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা।
নওগাঁর উকিলপাড়ার বাসিন্দা হারুন ইসলাম বলেন, `বাসায় আত্মীয় এসেছে। মুরগি কিনতে এসে দাম শুনে অবাক হয়ে গেছি। গত ১০ দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২০-৪০ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।'
সুমন মণ্ডল নামে আরেক ক্রেতা বলেন, `আমি একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অল্প বেতনে চাকরি করি। প্রতি মাসে মুরগির মাংস কেনা বাবদ হিসাব রাখতে হয়। কিন্তু যা দাম বেড়েছে, এ মাসে আর মুরগি কিনব না। হিসাবের বাইরে দাম চলে গেছে। দাম কমাতে প্রশাসনের নজরদারি ও শক্ত পদক্ষেপ জরুরি।'
নওগাঁ পৌর বাজারের খুচরা মুরগি বিক্রেতারা জানান, এখানে কেউ ইচ্ছা করে দাম বাড়াননি। উৎপাদন কম হওয়ায় আমদানি কম হচ্ছে, এ জন্য দাম বেড়েছে। কেবল ৫ থেকে ১০ টাকা লাভে মুরগি বিক্রি করা হয়।
জনি হোসেন নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, খামারে দাম বাড়লে খুচরা বাজারে দাম বাড়বে এটা স্বাভাবিক। এ ছাড়া লকডাউনের পর এখন বিয়ে ও সামাজিক অনুষ্ঠান বেশি হচ্ছে, এ জন্য চাহিদাও বেড়েছে। তাই দাম বেড়েছে।
নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার সবচেয়ে বড় খামারি ফিরোজ হোসেন বলেন, লকডাউনের সময় অনেক লোকসান হয়েছে। এ ছাড়া মুরগির খাদ্যের দাম প্রতি বস্তায় কয়েক দিনের ব্যবধানে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ জন্য সরকারি নজরদারির অভাব দায়ী। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় মুরগির দাম বেড়েছে। এখন দাম কমে গেলে লোকসানে পড়তে হবে।
নওগাঁ পৌর মুরগিবাজারের সভাপতি ও আড়তদার ইউনুস আলী বলেন, মুরগির দাম বাড়ানো বা কমানোর বিষয়টা আড়তদারেরা করেন না। খামারিরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। খামারে দাম বাড়লে আমরাও বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করি। তবে খাদ্যের দাম কমে এলে মুরগির দামও কমবে।