হোম > সারা দেশ > বগুড়া

আবাদি জমি থেকে কাটা হচ্ছে মাটি, হুমকির মুখে বসতবাড়ি  

রঞ্জন কুমার দে, শেরপুর (বগুড়া) 

তিন ফসলি উর্বর জমি, উচু ভিটা কিংবা ক্ষুদ্র জলাশয় কোন কিছুই বাদ পড়ছে না। মাটি কেটে বানানো হচ্ছে গভীর পুকুর। বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় আইনের তোয়াক্কা না করে দিনে-রাতে সমান তালে চলছে অবৈধভাবে মাটি কাটার এই উৎসব। এর ফলে একদিকে যেমন এলাকার উর্বর আবাদি জমির পরিমাণ কমছে অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে বসতবাড়ি। 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মির্জাপুর ইউনিয়নের সুখানগাড়ি, বেলতা, উচরং, খোট্টা পাড়া, খানপুর ইউনিয়নের সুবলী, বড়ইতলী, বিশালপুর ইউনিয়েনের জামাইল বাজার সংলগ্ন চাটাইল, শাহবন্দেগী ইউনিয়নের উচরং, ঘোলাগাড়ি, কুসুম্বী ইউনিয়নের কেল্লা, বোর্ডের হাট, চন্ডেশ্বর, গাড়িদহ ইউনিয়নের মাগুড়গাড়ি, খামারকান্দি ইউনিয়নের বড়বিলাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক এলাকায় চলছে অবৈধভাবে মাটি কাটার কাজ। 

অথচ সরকারি গেজেটে প্রকাশিত মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণ ২০১৩ সালের ৫৯ নং আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে কৃষি জমি হতে মাটি কাটা বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তা হলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড বা ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডাদেশ হইবেন। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনরাত মাটি কাটা চলে। মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ভারী ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তা ভেঙে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এছাড়াও গাড়ির শব্দ ও ধুলার কারণে বাইরে বের হওয়া যায় না। চারপাশে পাড় করে ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীর গর্ত করার ফলে আশপাশের আবাদি জমি ও বসত বাড়ি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। জমির মালিক ও মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা প্রকাশ্যে কিছু বলার সাহস পান না। মাঝে মাঝে পুলিশ ও সাংবাদিক এসে শুধু ছবিই তোলে কিন্তু কোন প্রতিকার হয় না। 

এ বিষয়ে মির্জাপুর ইউনিয়নের সুখানগাড়ি এলাকার রঞ্জনা খাতুন বলেন, আমার থাকার ঘর ঘেঁষে আবাদি জমি কেটে গভীর করা হচ্ছে। এলাকার বর্তমান চেয়ারম্যান মো. জাহেদুল ইসলাম মাটি কেটে তাঁর ইটের ভাটায় নিয়ে যাচ্ছেন। আমার ঘর যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। সব সময় আতঙ্ক কাজ করে। তা ছাড়া সারা দিন রাত এস্কেভেটর ও ট্রাকের শব্দে ঘুমাতে পারি না। সন্তানেরা পড়তে পারে না। 

ভূমি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা অবৈধ। এছাড়াও বসত বাড়ি থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে মাটি কাটার বৈধতা নেই। চাষের জমি খনন করে মাটি কাটার জন্য প্রশাসনের অনুমতি আছে কিনা এমন প্রশ্নে মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম বলেন, লিখিত অনুমতি না থাকলেও তিনি বিষয়টি শেরপুর উপজেলার ইউএনওকে মৌখিকভাবে অবগত করেছেন। 

একই দাবি একাধিক মাটি ব্যবসায়ীদের। নাম প্রকাশে একাধিক মাটি ব্যবসায়ী বলেন, এসব কাজে প্রশাসনের লিখিত কোন অনুমতি থাকে না। তবে তারা মৌখিক অনুমতি নিয়েই মাটি কেটে থাকেন। তবে নিরুপায় হয়েই তারা একাজ করেন বলে তাদের দাবি। তারা বলেন, ফসলি জমির মাটি না পেলে ইট ভাটাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। তাছাড়া মানুষ বসত ভিটা উঁচু করার জন্য মাটি কেনে। 

এ বিষয়ে শাহ বন্দেগি ইউনিয়নের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর মাটি কেটে আবাদি জমি ধ্বংস করা হয়। প্রথমবার মাটি ব্যবসায়ীরা জমি সংস্কারের নামে মাটি কেটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। পরের বছরেই আবার সেই জমিকে পুকুর দাবি করে গভীরভাবে খনন করা হয়। এর ফলে আশপাশের জমির পানি থাকে না। আমাদের চাষের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাঝে মাঝে প্রশাসন জরিমানা করলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার মাটি কাটা বন্ধ হচ্ছে না। 

তবে কোন প্রকার অনুমতির কথা অস্বীকার করে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, মাটি ব্যবসায়ীদের সংবদ্ধ চক্রটি খুবই শক্তিশালী। তারা রাতে মাটি কাটে। গত ১৫ দিনে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৪ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তাদের মাটি কাটা বন্ধ করতে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি: রাকসু জিএস আম্মার

রাজশাহী-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: তহবিলের হিসাব না পেয়ে দৃশ্যত স্থবির রাকসু

রাজশাহীতে র‍্যাবের অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

রাজশাহীর চরাঞ্চলে শিয়ালের আতঙ্ক, এক রাতে আক্রান্ত ২০০ গরু

বগুড়ায় বিএনপির মিছিলে হামলার মামলায় শ্রমিক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ওসমান হাদি হত্যার বিচার দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

সিরাজগঞ্জে লাশবাহী গাড়ির সঙ্গে সিমেন্টবোঝাই ট্রাকের সংঘর্ষ, আহত ২

যুবকের হাত-পা কেটে দেওয়ার অভিযোগ জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে

চিড়িয়াখানা ফাঁকা করে আবার প্রাণ ফেরানোর চেষ্টায় রাসিক