রাজশাহীর বাঘায় প্রায় দুই মাস আগে মারা যাওয়া মোবাশ্বিরা ইসলাম মোহনা গতকাল রোববার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। পরীক্ষার ফল শোনার পর থেকে তার মা-বাবার কান্না থামছে না।
মোবাশ্বিরা ইসলাম মোহনা উপজেলার নওটিকা গ্রামের বাসিন্দা পীরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মহিরুল ইসলামের মেয়ে। উপজেলার নওটিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোবাশ্বিরা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। তার জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার খবর শোনার পর থেকে তার মা-বাবাসহ স্বজনেরা কান্নাকাটি করছেন। আজ সোমবার দুপুরে তাদের বাড়ি গিয়ে এমনটাই দেখা গেছে।
পরীক্ষা দেওয়ার কয়েক দিন পর মোবাশ্বিরার জিহ্বার নিচে একটি সিস্ট অস্ত্রোপচার করা হয়। রাজশাহী মহানগরের লক্ষ্মীপুর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গত ২০ মার্চ সন্ধ্যায় তার অস্ত্রোপচার হয়। এরপর অবস্থার অবনতি ঘটলে দ্রুত তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে পর দিন ২১ মার্চ ভোরে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
মোবাশ্বিরার মা দিলারা ইসলাম বলেন, মেয়ের রাজশাহী কলেজে পড়ার ইচ্ছে ছিল। মেয়ে ফলাফলে ১ হাজার ২০০-র বেশি নম্বর পেল। কিন্তু তার আর কলেজে ভর্তি হওয়া হলো না।
নওটিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শরিফা বেগম বলেন, ‘মোবাশ্বিরার অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিল। সে অকালে ইহলোক ছেড়ে চলে যাবে কখনো ভাবতে পারিনি। তার ফল দেখে অস্বস্তি লাগছিল।’
এ বিষয়ে মোবাশ্বিরার বাবা মহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অস্ত্রোপচার করতে যাওয়ার সময় রাজশাহী কলেজ দেখে মাকে বলেছিল, “আমি রাজশাহী কলেজে ভর্তি হব।” মোবাশ্বিরা আমাকে আরও বলেছিল ফলাফলে যে নম্বর থাকবে তাতে রাজশাহী কলেজে ভর্তি হতে পারবে। অপারেশনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার মৃত্যু হলো।’