রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে বিএনপির প্রার্থী ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন দলটির ৩৭ নেতা। তাঁরা লিখিত অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে এ অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ৩ নভেম্বর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ডি এম জিয়াকে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষণার পর নেতা-কর্মীরা সংগঠনবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে না গেলেও নীরব অবস্থানে থাকার কারণে জিয়া তাঁদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। এতে তিনি কর্মী সংকটে পড়েছেন এবং বড় সমাবেশ করতে পারছেন না।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মনোনয়ন পাওয়ার পরও জিয়া ও তাঁর অনুসারীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। বাগমারাজুড়ে ভয়ভীতি সৃষ্টি করেছেন। গত বছরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলের পর তিনি বহিষ্কৃত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি বাহিনী তৈরি করে পুকুর দখল, বাড়ি ভাঙচুর, চাঁদাবাজি ও লুটপাটসহ নানা কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। এসব ঘটনার মধ্যে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়া এবং এ নিয়ে একাধিক জিডিও হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে জিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং তৎকালীন মহাসচিবের স্বাক্ষর জাল করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিলেন। পরে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হওয়া এই নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের এমপিদের সঙ্গে আঁতাতেরও অভিযোগ তোলা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে গুরুতর কয়েকটি সাম্প্রতিক ঘটনারও উল্লেখ করা হয়। তাঁদের দাবি, জিয়ার লাগামহীন আচরণে বিএনপির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কর্মী-সমর্থকেরা আতঙ্কে রয়েছেন এবং তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা প্রায় ভেঙে পড়েছে। সর্বোচ্চ ২০-২৫ জন অনুসারী নিয়ে তিনি মাঠে নামতে পারছেন।
অন্যদিকে জামায়াতের প্রার্থী ডা. আব্দুল বারী দলীয় পূর্ণ শক্তি নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করছেন। এসব কারণে নেতারা ডি এম জিয়াকে বাদ দিয়ে নতুন প্রার্থী ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এতে তাঁরা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব অধ্যাপক কামাল হোসেনকে প্রার্থী করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে সম্প্রতি তিনি বলেন, যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে তার তদন্ত তিনিও চান। প্রশাসন যেন সব ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়।