হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

আমিসহ পরিবারের সবাই লজ্জিত: জাবিতে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মামুনের বড় ভাই

সিয়াম সাহারিয়া, নওগাঁ ও নূরুন্নবী ফারুকী, ধামইরহাট

‘গার্মেন্টসে চাকরি করার কথা বলে মামুন ঢাকায় গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে নেশা করাসহ খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে, সে কারণে একাধিকবার জেলও খেটেছে শুনেছি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানতে পারলাম। এই ঘটনার সঙ্গে মামুন জড়িত কি-না আমি জানি না। তবে তাঁর এসব কর্মকাণ্ডের জন্য আমিসহ পরিবারের সবাই লজ্জিত।’ 

এভাবেই কথাগুলো বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী অভিযুক্ত মামুনুর রশীদ ওরফে মামুনের বড় ভাই জুয়েল হক। 

আজ বৃহস্পতিবার সকালে মামুনের গ্রামের বাড়ি নওগাঁ সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে পত্নীতলা উপজেলার শিহারা ইউনিয়নে ভারত সীমান্ত লাগোয়া প্রত্যন্ত গ্রাম আমন্ত এলাকায় গিয়ে মামুনের বড় ভাইর সঙ্গে কথা হয়। ওই এলাকার হাসির উদ্দিনের চার সন্তানের মধ্যে মামুন তৃতীয়। ওই গ্রামেই বড় হয় মামুন। 

ছোটবেলায় আমন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে মামুন। পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গে কৃষি কাজে সহযোগিতাও করত। ১৯৯১ সালে মা এবং ২০০৮ সালে মামুনের বাবা মারা যান। গার্মেন্টসে চাকরি করার কথা বলে ১৯৯৮ সালে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে আসে মামুন। শুরুতে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেও গত ২০ বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রাখেনি। 

স্বজন ও প্রতিবেশীরা বলছেন, ঢাকায় গিয়ে মামুন একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করার কথা পরিবারকে জানিয়েছিল। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক নারীকে বিয়ে করেন। তাঁদের ঘরে একটা ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। ২০১৫ সালে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর তাঁর একমাত্র ছেলে অনন্তকে গ্রামের বাড়িতে বড় ভাইয়ের কাছে রেখে নিরুদ্দেশ হয় মামুন। এরপর আর বাড়িতে আসে না মামুন। তাঁর ছেলের দায়িত্ব নেন মো. জুয়েল হক। মামুনের ছেলে বর্তমানে কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তবে ছেলের সঙ্গেও মামুনের যোগাযোগ নেই বলে মামুনের বড় ভাই জুয়েল হক জানান।

কথা হয় মামুনের বাল্যবন্ধু আকবর হোসেনের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছোটবেলায় একসঙ্গে মামুন আর আমি ঘোরঘুরি ও খেলাধুলা করতাম। বড় হয়ে একসঙ্গে কৃষি কাজও করেছি। তখন সে ভালোই ছিল। এরপর সে ঢাকা গেলে প্রায় ১৫-২০ বছর ধরে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়ে ওঠেনি। ধর্ষণের সঙ্গে মামুন জড়িত কি না তা জানি না। আটক হয়েছে শুনলাম, তাও কি সে নাকি মূল পরিকল্পনাকারী। এটা শুনে তো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। এমন নিকৃষ্ট ঘটনার সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি। 

স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, ‘মামুন ভাইয়ের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, লজ্জাকর। এলাকায় থাকার সময়ে তাঁর বিষয়ে এমন কোনো ঘটনা শুনিনি। তবে জানতাম ঢাকায় থাকতো। কোনো একটা চাকরি করত। বাড়িতে তাঁর একটা ছেলে আছে। কীভাবে সে এই ধরনের খারাপ কাজ করল।’ 

এ ছাড়া আমন্ত গ্রামে আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে স্থানীয়দের অনেকেই মামুনকে চিনতে পারেননি। কেউ আবার চিনে থাকলেও তাঁর বিষয়ে কিছুই বলতে পারেননি।

আরও পড়ুন:

বগুড়ায় ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত তিন

গভীর নলকূপ খনন: বরেন্দ্রজুড়ে শত শত মৃত্যুকূপ

শিশু সাজিদের শেষ বিদায়ে হাজারো মানুষের ঢল

আমার একটা কলিজা হারায় ফেলছি, বিচার চাই: সাজিদের বাবা

প্রাথমিকে শতভাগ বই, মাধ্যমিকে এল অর্ধেক

সব চেষ্টা—আকুতি বিফলে, মায়ের কোলে মৃত সাজিদ

শিশু সাজিদ মারা গেছে

শিশু সাজিদকে উদ্ধার, নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে

শিশু সাজিদের বাঁচার আশা নেই, বন্ধ করা হয়েছে অক্সিজেন

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা