হোম > সারা দেশ > বগুড়া

চামড়ার মূল্য নেই, হতাশায় গরিব অসহায়

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ছাগল ও ভেড়ার চামড়ার কোনো মূল্য নেই। গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে নামমাত্র মূল্যে। হতাশায় গরিব অসহায় ও এতিমখানা-মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী। মূল্য না থাকায় ছাগল-ভেড়ার চামড়া নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। 

জানা যায়, গরিব-অসহায় এবং এতিমখানা-মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর চামড়া বিক্রির টাকা থেকে সহযোগিতা পায়। সেই সহযোগিতা দিয়ে তাদের কয়েক মাসের ভরণ-পোষণ চলে। চামড়ার দরপতনে গত কয়েক বছর হলো সেই সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। 

গত রবিবার ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারের চিত্র একেবারেই নাজুক। প্রতিটি গাভি-গরুর চামড়া বিক্রি করা হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি ষাঁড় গরুর চামড়া ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে ছাগল বা ভেড়ার চামড়া ফ্রিতে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের বাদশা মিয়া বলেন, ‘কয়েকটি ছাগলের চামড়া বিক্রির জন্য উপজেলা সদরে নিয়ে গিয়েছিলাম। চামড়াগুলো ফ্রিতে দিয়ে এসেছি। উপজেলা সদরে যাতায়াত খরচের টাকা আমাকে লোকসান হিসেবে গুনতে হয়েছে।’ 

একই গ্রামের ভুট্টো মিয়া বলেন, ‘ঈদের পরদিন আকিকা দিতে কয়েকটি খাসি জবাই দিয়েছি। দাম না থাকায় চামড়াগুলো যমুনা নদীতে ফেলে দিয়ে এসেছি।’ 

সারিয়াকান্দি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মডেল কেয়ারটেকার মো. এনামুল ইসলাম জানান, ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সারিয়াকান্দির সমগ্র উপজেলায় ছোট-বড় সর্বমোট ৫১০টি মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদের প্রতিটি জামাতে গড়ে ১৭টি গরু ২২টি ছাগল এবং ১টি ভেড়া কোরবানি হয়েছে। 

সারিয়াকান্দির হাটশেরপুর ইউনিয়নের শতবর্ষী ঝলো বেগম বলেন, ‘যেসব পরিবার কোরবানি দেয়, তাদের বাড়ি এবং মসজিদের জামাত থেকে বহু বছর ধরে আমি চামড়ার টাকা সংগ্রহ করি। সেই টাকা দিয়ে আমার কয়েক মাসের চাল-ডালের খরচ চলে। গত বছরও কোনো চামড়ার টাকা পাইনি, এ বছরও পাব না। এতে না খেয়ে থাকা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ খোলা থাকল না।’ 

সারিয়াকান্দি উপশহর জামিয়া সিদ্দিকিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মো. বাবু মিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর কোরবানির চামড়া থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আমাদের প্রতিষ্ঠানের কোষাগারে জমা হতো। সেই টাকা দিয়ে আমার এতিমখানার এতিমদের কয়েক মাসের খাওয়ার খরচ চলত। শিক্ষকদের বেতনও দেওয়া হতো। গত কয়েক বছর আমরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এ বছরও মসজিদের জামাতগুলোতে চামড়া থেকে সহযোগিতার চিঠি দিয়েছিলাম। চামড়ার দাম শুনে আমরা আশাহত এবং মর্মাহত হয়েছি। 

সারিয়াকান্দির প্রান্তিক ফরিয়া রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি প্রতিটি গাভির চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং ষাঁড় গরুর চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে ক্রয় করেছেন। ছাগলের চামড়া তিনি ফ্রিতে কিনেছেন, আবার ফ্রিতেই বিক্রি করেছেন। ছাগলের চামড়া বগুড়া জেলা সদরে নিয়ে যেতে পরিবহন ভাড়াটা তাঁকে লোকসান গুনতে হয়েছে। বগুড়া বাদুড়তলা ট্যানারি মালিকেরা আমাদের চামড়ার মূল্য কম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাই কম মূল্যে কোরবানির গরু-ছাগলের চামড়া ক্রয় করতে হয়েছে। 

সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, এ বছর ঈদুল আজহার দিনে সর্বমোট ২৯ হাজার পশু কোরবানি হয়েছে। এর মধ্যে গরু ও মহিষ ১৫ হাজার এবং ছাগল ভেড়ার সংখ্যা ১৪ হাজার।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী মো. রেজাউল করিম জানান, দেশব্যাপী ট্যানারিশিল্পে চামড়ার দরপতনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চামড়ার দামে ধসের কারণে উপজেলার গরিব-অসহায় ও এতিমখানা-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী-শিক্ষকেরা সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করবেন।

মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে রাজশাহী

রাজশাহীতে কৃষক লীগ নেত্রী ও আ.লীগ সমর্থক আইনজীবীর মনোনয়নপত্র দাখিল

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: শোকে স্তব্ধ বগুড়াবাসী

কম্বল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৩

শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি: রাকসু জিএস আম্মার

রাজশাহী-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: তহবিলের হিসাব না পেয়ে দৃশ্যত স্থবির রাকসু

রাজশাহীতে র‍্যাবের অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

রাজশাহীর চরাঞ্চলে শিয়ালের আতঙ্ক, এক রাতে আক্রান্ত ২০০ গরু

বগুড়ায় বিএনপির মিছিলে হামলার মামলায় শ্রমিক লীগ নেতা গ্রেপ্তার