রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত রিকশাচালক গোলাম হোসেনের (৪৮) মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মামলাটি করেন নিহত ব্যক্তির স্ত্রী পরিবানু বেগম। মামলায় ছয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলায় ছয় ব্যক্তির নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
আসামিরা হলেন– নগরীর শাহ মখদুম থানা বিএনপির আহবায়ক সুমন সরদার, চন্দ্রিমা থানা বিএনপির আহবায়ক ফাইজুর হক ফাহি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মীর তারেক, মহানগর মহিলা দলের সহ-ক্রীড়া সম্পাদক লাভলীর স্বামী সোহেল রানা, তার ভাই মো. নাঈম এবং যুবদল কর্মী রনি।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আসামি সুমন সরদারের বিরুদ্ধে জমি, পুকুর দখলসহ চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। আসামি নাঈম আলোচিত রিয়াজুল হত্যা মামলার আসামি। এছাড়া অন্য আসামিদের বিরুদ্ধেও নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে গত ৬ মার্চ নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় এক আওয়ামী লীগ নেতার ফ্ল্যাটে অভিযান ও তাঁর ভাইকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে পরদিন বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দড়িখড়বোনা ও আশপাশের এলাকায় প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় তিনটি মোটরসাইকেল।
ওই সময় মালিকের গ্যারেজে রিকশা জমা করে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলেন গোলাম হোসেন। তখন এক পক্ষ আরেক পক্ষের লোক ভেবে তাঁকে ছুরিকাঘাত করে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
ছয় বছর বয়সে মা–বাবাকে হারিয়ে রাজশাহীর এতিমখানায় ঠাঁই হয়েছিল কুমিল্লার গোলাম হোসেনের। তারপর বিয়ে, সংসার সবই হয় এই শহরে। তিনি দড়িখড়বোনা এলাকায় রেললাইনের পাশে ২ হাজার টাকা ভাড়ায় একটি টিনের ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন।