কলেজটিতে বর্তমানে ১০ জন শিক্ষক ও দুজন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। কলেজটির পরিচিতি থাকলেও শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র একজন। চলতি বছর এই একজন শিক্ষার্থী শুধু এক বিষয়ে (তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি) এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
আজ বৃহস্পতিবার ফলাফল ঘোষণা হলে দেখা যায়, কলেজটির একমাত্র পরীক্ষার্থী দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে পারেনি। এমন ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার সাতপাই উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে।
ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সূত্রে জানা যায়, মো. খায়রুল ইসলাম নামের একজন শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠান থেকে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে ফেল করে। সে এ বছর আবার প্রতিষ্ঠানটি থেকে ফরম ফিলাপ করে ওই এক বিষয়ে সৈয়দপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন করে। ফল প্রকাশে দেখা যায়, ওই একজন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে, অর্থাৎ ওই কলেজ থেকে এ বছর কেউ পাস করেনি; একজন পরীক্ষার্থী, একজনই ফেল।
সূত্রটি আরও জানায়, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে শিক্ষকেরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১০ জন শিক্ষক ও দুজন কর্মচারী রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দু-একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী নিয়ে কোনো রকমে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। কলেজের শিক্ষকেরাও নিয়মিত আসেন না। ক্লাস ঠিকমতো হয় না। প্রতিদিন আগেই ছুটি হয় প্রতিষ্ঠানটিতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চান না কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হোক। তাই তিনি শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে অনাগ্রহী। আমরা স্যারকে একাধিকবার বলেও তিনি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতে চান না। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির জমি নিয়েও রয়েছে ঝামেলা। ১০ বছর আগে আমাদের নিয়োগ দেওয়া হলেও আমরা কোনো বেতন-ভাতা পাই না।’
অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থী মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ১ হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে কলেজে ভর্তি হই। এরপর ক্লাস করার জন্য অধ্যক্ষ স্যারকে কল দিলে তিনি বলেন যে, তুমি বাসায় ও প্রাইভেটে পড়ো।’
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হাকিম এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘কলেজটি এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি থেকে একজন মাত্র শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দিয়ে ফেল করার বিষয়টি জেনেছি। কেন এমন হলো—বিষয়টি দেখব।’