দোকান থেকে বেশি দামে সার কেনা নিয়ে নীলফামারীর ডিমলায় ডিলারের গুদাম ভাঙচুর ও এক হাজার বস্তা সার লুটের অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার গোমনাতি আমবাড়ি হাটে এ ঘটনা ঘটে।
ডিলার ও কৃষি অফিস জানায়, গুদামে ইউরিয়া ৬২০ বস্তা, ডিএপি ৩৮০ বস্তা, পটাশ ১৪২ বস্তা ও টিএসপি ৭৩ বস্তা সার সরকারের নির্ধারিত দামে কৃষকদের মধ্যে বিতরণের জন্য মজুত ছিল। এই বস্তাগুলোর বেশির ভাগই লুট হয়ে গেছে।
জানা যায়, খুচরা দোকান থেকে বেশি দামে সার কেনাকে কেন্দ্র করে আজ উপজেলার আমবাড়ি হাটে বিসিসিআই ডিলার আরবি এন্টারপ্রাইজের গুদাম ভাঙচুর করেন কৃষকেরা।
এ সময় প্রায় এক হাজার বস্তা সার লুট করে নিয়ে যান বিক্ষুব্ধরা। খবর পেয়ে ডোমার উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এর আগে সকাল থেকে গুদাম এলাকায় শতাধিক কৃষক সারের দাবিতে জড়ো হন।
কৃষকদের দাবি, সরকারি ডিলারদের কাছে সার মিলছে না, অথচ খুচরা দোকানে একই সার ৩০০-৫০০ টাকা বেশি দামে পাওয়া যায়। সার সংকটের কারণে রবি মৌসুম ব্যাহত হবে। রবি চাষ—বিশেষ করে গম, ভুট্টা, আলু, সরিষা ও রসুন নির্ভর করে সময়মতো সার পাওয়ার ওপর। সারের সংকট অব্যাহত থাকলে উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে এ ক্ষোভ জানান তাঁরা।
আব্দুর রাজ্জাক নামের এক কৃষক বলেন, ‘ডিলারের গুদামে গেলে বলে সার নাই। কিন্তু বাজারে গেলেই দেখি একই ডিলারের সার বস্তায় বস্তায় বিক্রি হচ্ছে। আমরা কি তবে কৃষক না?’
গোমনাতির কৃষক রমজান আলী বলেন, ‘একটা বস্তা ডিএপি সার পাওয়ার জন্য তিন দিন ঘুরছি। শেষে বাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকার বস্তা ১৬০০ টাকায় নিয়ে আসলাম। সরকার দাম ঠিক রাখলেও মাঠে আমরা তার সুফল পাই না।’
তিস্তা চর এলাকার কৃষক জাহেদ আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিটি মৌসুমে একই অবস্থা। ডিলাররা সিন্ডিকেট করে সার আটকে রাখেন। পরে বেশি দামে বাজারেই পাওয়া যায়। কৃষি অফিস শুধু দেখে।’
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি দামে সার নিশ্চিত করতে আমরা মাঠপর্যায়ে তদারকি করছি। তবে বাজারে অতিরিক্ত দামে সারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শায়লা সাঈদ তন্বী বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক। লুট হওয়া সার উদ্ধারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সার বিক্রিতে অনিয়ম পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’