নাটোরে বোরকা পরে হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসক এ এইচ এম আমিরুল ইসলামকে খুন করেন তাঁর চাকরিচ্যুত ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) আসাদুল ইসলাম (২৭)। খুনের পর চিকিৎসকের কক্ষেই প্রায় ১ ঘণ্টা অবস্থান করে ফের বোরকা পরে বেরিয়ে যান তিনি। প্রযুক্তির সহায়তা ও সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নাটোর শহর থেকে আসাদুলকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় আটক আসাদুলকে জনসেবা হাসপাতালে আনে পুলিশ। পরে সাংবাদিকদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ব্রিফ করেন নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন।
নিহত ডা. আমিরুল বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) নাটোরের আহ্বায়ক। তিনি সিংড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। গত সোমবার সকালে নাটোরের জনসেবা হাসপাতালের কক্ষে তাঁর গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। তিনি হাসপাতালের মালিক ও পরিচালক ছিলেন।
এসপি আমজাদ হোসাইন বলেন, ৪ বছর আগে বগুড়ার টিএমএসএস থেকে পড়াশোনা শেষে ল্যাব রেজিস্ট্রার হিসেবে জনসেবা হাসপাতালে যোগ দেন আসাদুল। পরবর্তী সময়ে তিনি ডা. আমিরুল ইসলামের পিএ হিসেবে কাজ শুরু করেন। হাসপাতালের এক নারী স্টাফের সঙ্গে আসাদুলের সম্পর্কের ঘটনা জানাজানি হলে গত ২৫ আগস্ট তাঁদের দুজনকে ডেকে কড়া শাসনের পর আসাদুলকে চাকরিচ্যুত করেন ডা. আমিরুল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে বগুড়া থেকে দুটি ছুরি ও বোরকা কিনে ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় বোরকা পরিহিত অবস্থায় ডা. আমিরুলের কক্ষের সিঁড়ির নিচে অবস্থান করেন আসাদুল। ডা. আমিরুল কক্ষ থেকে বের হলে ভেতরে ঢুকে খাটের নিচে লুকিয়ে পড়েন আসাদুল। রাত ১টার পর রোগী দেখে আমিরুল কক্ষে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সোয়া ৪টার দিকে খাটের নিচ থেকে বেরিয়ে ঘুমন্ত ডা. আমিরুলের গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিতের পর ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে বোরকা পড়ে বেরিয়ে আসেন আসাদুল। সোমবার প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নিশ্চিত করে নাটোর শহর থেকে আসাদুলকে আটক করে পুলিশ। বগুড়ার নন্দীগ্রাম থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসাদুল স্বীকার করেছেন হত্যা নয়, ডা. আমিরুলকে শরীরের যেকোনো একটি অঙ্গ কেটে পঙ্গু করার পরিকল্পনা করে তিনি। তাই ডা. আমিরুলের গোপনাঙ্গ কেটে ফেলেন। যে নারী স্টাফের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেই নারীসহ ৬ জন পুলিশের হেফাজতে আছেন। তাঁদেরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।