জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার সার্বিক বন্যার পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।
এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এখন পর্যন্ত উপজেলার কুলকান্দী, চিনাডুলী, বেলগাছা, নোয়ারপাড়া, সাপধরী, পলবান্ধা ও চরপুটিমারী ইউনিয়নের ৪২টি গ্রামের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তবে সরকারি হিসাবে ১ হাজার ৫৫০ পরিবারের ১০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মানুষের বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। বিভিন্ন গ্রামের অভ্যন্তরীণ পাকা ও মাটির রাস্তার ওপর দিয়ে স্রোত বয়ে যাচ্ছে। বন্যার্ত মানুষ নৌকা বা কলার ভেলা নিয়ে চলাচল করছেন। কেউ কেউ আশ্রয়ের জন্য উঁচু স্থানে ছুটছেন।
চিনাডুলী ইউনিয়নের দক্ষিণগিলা বাড়ি গ্রামের আকবর আলী বলেন, ‘ঘরের ভেতরে এক বুক পানি। বাধ্য হয়েই বউ পোলাপান গরু-ছাগল নিয়ে রাস্তায় কোনো রকম আশ্রয় নিয়েছি। চার দিন থেকে ইনকাম বন্ধ। হাতে টাকাপয়সাও নেই কী করব বুঝে উঠতে পারছি না!’
ঘোনাপাড়া গ্রামের আক্কাস আলী শেখ বলেন, বাড়ির চতুর দিকে পানি। আর কয়েক আঙুল পানি বাড়লে, ঘরের ভেতর পানি চলে যাবে। তিন দিন ধরে বন্দিজীবন কাটাচ্ছি।
উপজেলার সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বিএসসি বলেন, সাপধরী ইউনিয়নের শতাধিক বসতভিটায় বন্যার পানি ঢুকেছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, এরই মধ্যে বন্যার কারণে ৪৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যার পানিতে অনেক বিদ্যালয়ের মাঠ তলিয়ে গেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফা আক্তার কাকলী বলেন, বন্যার পানি ওঠায় ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্যাজপাঠক (বন্যার পানি পরিমাপক) আব্দুল মান্নান বলেন, ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টের বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেদী হাসান টিটু জানান, বন্যার্ত মানুষের জন্য জরুরি ত্রাণসহায়তা হিসেবে ৪ মেট্রিক টন চাল, ২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।