হোম > সারা দেশ > শেরপুর

প্রথমবারের মতো শ্রীবরদীতে ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষ

শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি

শেরপুরের শ্রীবরদীতে প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক রাইস’ বা ‘কালো ধান’ চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন ৫ উদ্যোক্তা। দেশের বাইরে থেকে এ ধানের বীজ সংগ্রহ করে প্রায় পাঁচ একর জমিতে লাগিয়েছিলেন তাঁরা। এখন বাতাসে দোল খাচ্ছে সেই কালো ধান। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এ বীজ জেলায় ছড়িয়ে দিতে চান তাঁরা। 

জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার চককাউরিয়া গ্রামের চার বন্ধু মুক্তাদির আহম্মেদ নয়ন, স্বপন আহসান, নিশাত, শান্ত ও রাণীশিমুল ইউনিয়নের হাসধরা গ্রামের মো. গোলাম রসুল চীন থেকে তিন হাজার টাকা কেজি দরে ১৮ কেজি কালো ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। পরে তাঁরা প্রথমবারের মতো পাঁচ একর জমিতে ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধান লাগান। এতে সবকিছু মিলিয়ে তাঁদের খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। এরই মধ্যে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন তাঁরা। 

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় প্রথমবারের মতো কালো ধানের আবাদ হয়েছে। এ ধান সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। এ ধানগাছের পাতা ও কাণ্ডের রং সবুজ হলেও ধান ও চালের রং কালো। তাই এ ধানের জাতটি কালো চালের ধান নামে পরিচিত। ওষুধের গুণাগুণের জন্য ‘ব্ল্যাক রাইস’ চালকে ‘ওয়ার্ল্ড সুপার ফুড’ বলা হয়। তাই এর দামও অন্য সব চালের তুলনায় অনেক বেশি। বিশ্বের ধনী দেশগুলোতে এ চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। 

হাসধরা গ্রামের কৃষক গোলাম রসুল বলেন, আমি বিদেশ থেকে এ ধানের বীজ সংগ্রহ করি। কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আমি প্রায় দুই একর জমিতে এ ধান চাষ করেছি। এরই মধ্যে কালো ধান কাটা শুরু হয়েছে। বেশি লাভজনক হওয়ায় ও পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকায় আগামীতে এ কালো ধান চাষ করার কথা বলছেন স্থানীয় কৃষকেরা। আশা করছি, লাভবান হব। 

চককাউরিয়া গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বাপু হুনতাছি এ ধানে খুব বেশি লাভ। আমি তাঁদের বলেছি আমাকে যেন চারা দে, আমি আগামীতে লাগামু এক একর জমিত। কৃষি অফিসও কইতাছে, এ ধান নাকি ওষুধের মতো কাজ করে। তাই আগামীতে লাগামো।’ 

কৃষক ফকির মিয়া বলেন, ‘এই বন্দের মধ্যে নতুন এডা ধান আইছে, দেখতে কালা কালা। আবার হুনতাছি বিরাট লাভ, লাগাইতে খরচও কম। তাই আমি সামনের বার আবাদ করমু। ধানের চারা চাইছি তাদের কাছে, তারা দিবার চাইছে। এজন্নি এক হাজার টাকা করে চাইতাছে।’  

উদ্যোক্তা মুক্তাদির আহম্মেদ নয়ন বলেন, ‘আমরা চিন্তা করেছি চাকরির পিছে না ঘুরে নিজেরাই কিছু করব। এ চিন্তা থেকেই আমরা চার বন্ধু মিলে চীন থেকে ১০ কেজি ব্ল্যাক রাইস ধানের বীজ সংগ্রহ করি। পরে তিন একর জমি লিজ নেই। সেই জমিতে বীজ রোপণের জন্য সবকিছু করে আমাদের মোট খরচ হয় প্রায় ১ লাখ টাকা। প্রথমে আমরা চিন্তায় ছিলাম যে, এ ধান হবে কি হবে না। পরে কৃষি বিভাগের দেখাশোনা ও পরামর্শক্রমে আস্তে আস্তে ফলন আসতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ধানও পাকতে শুরু করে। আমরা হিসেব করে দেখেছি, তিন একরের খেত থেকে বীজ, ধান বিক্রি ও খাওয়াসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা আমাদের আয় হবে।’ 

অপর উদ্যোক্তা স্বপন আহসান বলেন, ‘এ বীজ আমরা জেলায় ছড়িয়ে দিতে চাই। এ জন্য আমাদের কৃষি বিভাগের সহযোগিতার প্রয়োজন আছে। আমরা চিন্তা করেছি, তিন হাজার টাকা কেজি দরে বীজ কিনে আনলেও আগ্রহী কৃষকদের এক হাজার টাকা দরে বীজ দেব। কারণ, কৃষকেরা যেন খুব সহজে, অল্প খরচে ও বেশি লাভে ডায়বেটিস এবং ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে এ ধান চাষ করতে পারে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হ‌ুমায়ূন দিলদার বলেন, উদ্যোক্তারা বারবার আমার অফিসে এসেছে। আমরা তাঁদের সার্বিক সহযোগিতা করেছি। এ ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ধান চাষ বাড়ালে কৃষক খুবই লাভবান হবে। 
 
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ডা. মুহিত কুমার দে বলেন, এরই মধ্যে আমরা ওই চার উদ্যোক্তার ধানখেত পরিদর্শন করেছি। খেতের ধান খুব ভালো হয়েছে। আমরা চাচ্ছি, তাঁদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে জেলায় অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে। এ জন্য কৃষি বিভাগ সব সময় তাঁদের পাশে থাকবে।

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহে হেলে পড়া ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা, ৩ ভবনমালিককে তলব

ভালুকায় পিতা-পুত্রসহ তিনজন গ্রেপ্তার

গড়ে ওঠেনি স্মৃতির মিনার

ময়মনসিংহে হেলে পড়েছে ৫ তলা ভবন, আতঙ্কে বাসা ফাঁকা

নেত্রকোনায় লরি-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ১

১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা সব নতুন বই হাতে পাবে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

শেরপুরে অবৈধ ৩ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

ময়মনসিংহে টমেটোখেতে ‘মড়ক’, দিশেহারা কৃষক