মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গভীর রাতে টিনের ঘরের সিঁধ কেটে মা ও খালার পাশ থেকে সাড়ে তিন বছর বয়সী ঘুমন্ত শিশুকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। অপহৃত শিশুর নাম মাহবুব ইসলাম মাহিন। গতকাল মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কৌলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে সিঁধ কেটে ঘর থেকে শিশু অপহরণের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাহিন উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা মধ্যপ্রাচ্যপ্রবাসী মর্তুজ আলীর ছেলে।
পুলিশ ও অপহৃত শিশুর পরিবার বলছে, শিশু মাহিনের বাবা মর্তুজ আলী আরব আমিরাত প্রবাসী। মাহিন তার মা লিজা বেগমের সঙ্গে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কৌলা গ্রামে নানা আকবর মিয়ার বাড়িতে থাকে। মঙ্গলবার রাতে মা লিজা ও খালা তামান্নার সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল সে। এ সময় ঘরের অন্য সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ঘরের পেছনে টিনের বেড়ার নিচের মাটি খুঁড়ে কে বা কারা পাশের ঘরে খাটের নিচ দিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় মাহিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় খাট থেকে তুলে নিয়ে চলে যায়।
নিখোঁজ মাহিনের নানি রোসনা বেগম বলেন, ‘জন্মের পর থেকে আমার নাতিসহ মেয়ে আমাদের বাড়িতে থাকে। আমার মেয়েজামাই দুবাইপ্রবাসী। আমরা সবাই রাতে ঘুমে ছিলাম। হঠাৎ আমার মেয়ের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার নাতি মাহিন নেই। তখন আমার স্বামী-সন্তানসহ ঘর থেকে বের হয়ে দেখি দুজন লোক কোলে করে মাহিনকে নিয়ে দৌড়ে সিএনজি অটোরিকশায় উঠছে। তখন আমাদের চিৎকারে আশপাশের বাড়ির লোকজন বের হয়ে ওই গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু দ্রুত গাড়িটি চলে যায়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দুই ব্যক্তি জানান, ‘ঘটনাটি তাদের নিজেদের আত্মীয়ের মধ্যে কেউ ঘটিয়েছে। বিষয়টি তাদের পারিবারিক হতে পারে।’
নিখোঁজ মাহিনের নানা আকবর মিয়া বলেন, ‘ঘটনার পর পুলিশকে খবর দিলে তারা আমার বাড়িতে গিয়ে দেখেছে। আমার মেয়ে লিজাসহ থানায় এসেছি। অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের আত্মীয় মজনু ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’
মাহিনের মা লিজা বেগম বলেন, ‘আমার বাচ্চার কী হয়েছে আমি কিছুই বলতে পারব না।’
এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় আজ দুপুরে বলেন, ‘শিশুটি অপহরণের পর থেকে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি। কারা জড়িত এবং কেন ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা অপহৃত শিশু মাহিনকে উদ্ধার করার পর জানাব। তদন্তের স্বার্থে এবং অপহরণে জড়িতদের আটকের জন্য এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সন্দেহভাজনদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। খুব দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারব বলে আশাবাদী।’