মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় টানা বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় ধান, মাসকলাই এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া অনেক মাঠ ডুবে রয়েছে, যেগুলোতে কোনো আবাদ করা যাবে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, ফসলের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে কাজ চলছে। জরিপ শেষে জানা যাবে মোট ক্ষতির পরিমাণ।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টিতে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা কল্পনাও করা যাবে না। অনেক মাঠ পুরো ডুবে গেছে। চাষিরা মাঠের ফসলের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ ধান, মাসকলাই ও সবজি পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার তেরাইল, চককল্যাণপুর, পলাশী, হিন্দা, বামন্দী মাঠ ডুবে গেছে। এসব মাঠে ধান, মাসকলাই, মরিচ ও সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবার অনেক মাঠ ডুবে থাকার কারণে এবার চাষাবাদই করা যাবে না।
তেরাইল মাঠের চাষি আব্দুল খালেক বলেন, এবার যে বৃষ্টিতে অনেক মাঠ ডুবে গেছে। অনেকের ধান ও মাসকলাই ডুবে গেছে। এসব ধান ও মাসকলাই নষ্ট হয়ে যাবে। ক্ষতির মুখে পড়েছে মরিচচাষিরাও।
বামন্দী মাঠের ধানচাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ধান পানিতে ডুবে আছে। সব নষ্ট হয়ে যাবে। এবারের আবাদ পুরোটাই ক্ষতি হয়ে গেল। অনেকের ধান ও মাসকলাই পানিতে ডুবে আছে। চাষির এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা খুব কঠিন হয়ে যাবে।’
মরিচচাষি মো. লিভলু হোসেন বলেন, ‘আমার তিন বিঘা মরিচের আবাদ রয়েছে। অনেক মরিচগাছ মারা গেছে। যে পরিমাণ লাভের আশা করেছিলাম, তার কিছুই হবে না।’
চককল্যাণপুর গ্রামের চাষি জিনারল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মাঠে যে বিল রয়েছে, এই বিলে অনেকে ধানের আবাদ করে। কিন্তু এবার পানিতে পুরো বিলসহ অনেকের আবাদি জমি ডুবে গেছে। বিলে ধানের আবাদ কেউ করতে পারবে না। গত বছর এখানে অনেক ধান হয়েছিল। সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পুরো বিলে মাছের চাষ করবে।’
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ডুবে গেছে। এতে কী পরিমাণ আক্রান্ত হয়েছে তা নিয়ে কৃষি অফিস কাজ করছে। কিছুদিন পরে মোট ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৃষ্টিতে অনেক মাঠের ফসল ডুবে গেছে। কৃষি অফিস থেকে জরিপ করা হচ্ছে। জরিপ শেষে জানা যাবে কী পরিমাণ ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।