মানিকগঞ্জের ঘিওরে চলতি বোরো মৌসুমে ধান কাটতে শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে। দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকজন নিয়ে তাঁরা ধান কাটছেন। অনেকে আবার বাড়তি পারিশ্রমিক দিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলছেন। এর ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে লোকসান হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।
মানিকগঞ্জের বেশির ভাগ খেতের বোরো ধান কাটা হলেও ঘিওর, শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার আংশিক অংশে নাবি বোরো ধান রোপণ করেন কৃষকেরা। ফলে এসব এলাকার ধান এখন পাকা ধরেছে।।
ঘিওর উপজেলার নন্দীরবাধা এলাকার কৃষক রাব্বি জানান, প্রতি বিঘা (৩৩ শতক) ধান কাটার জন্য সাড়ে ৬ হাজার টাকা দিতে চেয়েও শ্রমিক না পেয়ে বাধ্য হয়ে অন্যকে ধানের খড় দিয়ে ধান কাটছেন।
চরবাইলজুরী গ্রামের কৃষক জুড়ান মিয়া জানান, অনেক কৃষকই ধান কাটার শ্রমিক পাচ্ছেন না। ৩ বিঘা জমির ধান কাটতে দুই দিন খোঁজ করে তিনি শ্রমিক পেয়েছেন। তাঁদের বিঘাপ্রতি ৬ হাজার টাকা দিতে হবে। তিনি আরও জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শ্রমিকেরা ধান কাটতে বিঘাপ্রতি ৭ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন।
কুড়িগ্রাম থেকে আসা ধান কাটার শ্রমিক হামেদ আলী জানান, ভোর ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ধান কাটার কাজ করে দিনে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা পান। উচ্চমূল্যের বাজারে কৃষকেরা এই পারিশ্রমিককে বেশি বললেও এই উপার্জনে তাঁদের সংসার চলে না।
ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তহমিনা খাতুন বলেন, উপজেলায় ৭ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে এখানে ধান কর্তন শুরু হয়েছে। শ্রমিকের সংকট রয়েছে। সরকারিভাবে সমন্বিত উপায়ে ধানকাটা যন্ত্রের ওপর ৫০ ভাগ ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ধানকাটা যন্ত্র প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সাম্প্রতিক ঝোড়ো বাতাস আর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বেশির ভাগ খেতের ধান মাটির সঙ্গে মিশে থাকায় যন্ত্র দিয়ে কাটতে সমস্যা হচ্ছে।