মাদারীপুরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের পক্ষে কাজ করায় বালু ব্যবসায়ী হোসেন সরদারকে (৬০) পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে দাবি স্বজনদের। আজ শুক্রবার সকালে তাঁর ওপর হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের খোয়াজপুর-টেকেরহাট বাজারে হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত হোসেন সরদার মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের চর খোয়াজপুর গ্রামের আসমত আলী সরদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বালু ব্যবসা ব্যবসা করছেন।
স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে চিকিৎসকেরা দুই পা ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়।
আহত হোসেন সরদারের মেয়ে মৌসুমী আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বাবা নৌকার দল করেছেন, তাই আমার বাবাকে মেরেছে। আমার বাবা বৃহস্পতিবার (গতকাল) সার কিনতে গেলে স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থী ঈগল প্রতীকের লোকজন আমার বাবার ওপর হামলা করেছে। মূলত আমার বাবা নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন বলেই এই হামলা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।’
হোসেন সরদারের ছেলের বউ রাণী বেগম বলেন, ‘আমার শ্বশুরকে বিনা দোষে মেরেছে। তাই এই ঘটনার বিচার চাই আমরা।’
মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মুন্সি বলেন, মাদারীপুর-৩ আসনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হোসেন সরদার নৌকার পক্ষে কাজ করেন। কিন্তু নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ হেরে যান। বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। এ জন্য বিজয়ী প্রার্থীর লোকজন এই হামলা চালিয়েছেন।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এলাকার আধিপত্য নিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, মাদারীপুর-৩ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসা. তাহমিনা বেগম। এ আসনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ। নির্বাচনী জেরে এ আসনে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঈগল প্রার্থীর বিজয় মিছিলে বোমা হামলায় আহত চা দোকানি এমারত সরদার (৪৫) গত ১১ জানুয়ারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ২৩ ডিসেম্বর কালকিনিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কর্মী এসকেন্দার খাঁকে (৭০) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।